কারখানার দূষিত জল মেশায় খালটির বর্তমান অবস্থা। নিজস্ব চিত্র
বছর দশেক আগে আমতা-১ ব্লকের উদং-২ পঞ্চায়েতের পূর্ব গাজিপুরে একটি কাপড়কল তৈরি হয়েছিল। সেই কারখানার বর্জ্য রঙিন জল খালে মেশায় এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এর জেরে বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষাবাদ যেমন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তেমনই ঘরে ঘরে চর্মরোগ হচ্ছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।
লিখিত ভাবে গ্রামবাসীরা বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানালেও কোনও প্রতিকার হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। সোমবার তাঁরা গাজিপুরে বাগনান_আমতা রোড অবরোধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস মেলায় তাঁরা সে পথে হাঁটেননি।
উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক শমীককুমার ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনকে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে পাঠানো হবে। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’’ আমতা-১ ব্লক প্রশাসন সুত্রের খবর, তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারপরেও যদি প্রশাসনের তরফে কিছু করতে বলা হয়, করা হবে।এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ওই কারখানা থেকে রঙিন বর্জ্য জল এসে পড়ছে পঞ্চায়েতের বুক চিরে যাওয়া পূর্ব গাজিপুর খালে। এই খালটি শুধু ওই পঞ্চায়েতেরই নয়, আশপাশের কয়েকটি পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের কাছেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই খালের জলে যেমন চাষ হয়, তেমনই খালটি বিভিন্ন পুকুরের সঙ্গে যুক্ত থাকায় মাছ চাষেও সুবিধা হয়। পুকুরের জল গ্রামবাসী গৃহস্থালির কাজেও ব্যবহার করেন।
পূর্ব গাজিপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাপড়কলের রাসায়নিক মিশ্রিত জল খালে মেশায় সেই জল দূষিত হয়ে পড়ছে। তার ফলে, এই খালের জলের উপরে নির্ভরশীল কয়েকশো বিঘা জমিতে চাষাবাদ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাছ চাষ। পুকুরের জল ব্যবহার করায় বাসিন্দারা চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
গ্রামবাসী জানান, তাঁরা আগেও একাধিকবার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছেন, রাস্তা অবরোধ করেছেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। তাঁদের বক্তব্য, কারখানা বন্ধ হয়ে যাক, তাঁরা চান না। কিন্তু দূষণ বিধি মেনে কারখানা চালানো হোক।
স্থানীয় বিজেপি নেতা পিন্টু পাড়ুই বলেন, "কারখানা বন্ধ হোক এটা কেউ চান না। কিন্তু দূষণ বিধি না মেনে এতদিন ধরে কারখানা কী ভাবে চলছে, সেটা বিস্ময়ের। শাসক দলের মদতেই এটা হচ্ছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল শাসিত আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ধনঞ্জয় বাকুলি বলেন, "কারখানাটি সত্যিই গ্রামের মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এর আগে বহুবার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাদের বলা হয়েছে। এ বারেআমরা তাদের এক সপ্তাহ সময় দিয়ে দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থানিতে বলেছি। ব্লক প্রশাসনও তদন্ত করছে। সব রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy