প্রতীকী ছবি।
প্রতি বছর পুজোর আগে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের রাস্তাঘাটের জঞ্জাল ও আগাছা সাফ করা হয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। বিগত কয়েক বছর ধরে এমনই হয়ে আসছে। তবে এ বারের ছবিটা আলাদা। গত ডিসেম্বর থেকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে টাকা দেওয়াবন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার ফলে একদিকে যেমন এই প্রকল্পের শ্রমিকরা বকেয়া মজুরি পাননি, তেমনই তাঁদের দিয়ে কাজও করানো যাচ্ছে না। তার জেরে কোপ পড়েছে সাফাইয়ে।
তাছাড়া ১০০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমেই বিভিন্ন গ্রামীণ বেহাল রাস্তাও সংস্কার করানো হত। থমকে গিয়েছে সেই কাজও। এমনই হাল হাওড়ার গ্রামীণের বিভিন্ন এলাকায়।
সমস্যার কথা মেনে নিয়ে জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, নিজস্ব তহবিল থেকে উৎসবের মরসুমে রাস্তা সাফাই ও অন্যান্য কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে। সেখানেও অপারগতার কথা জানিয়েছে বেশিরভাগ পঞ্চায়েত। তাদের বক্তব্য, সরকার অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় অনেক কমেছে। তার উপরে ‘দুয়ারে সরকার’ করতে গিয়ে তাদের যতটুকু নিজস্ব তহবিল ছিল তাও শেষ হয়ে গিয়েছে। এ বাবদ সরকার কিছু টাকা দিয়েছে বটে। তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। ফলে অতিরিক্ত কোনও কাজ করাই তাদের পক্ষে অসম্ভব।
আমতা-১ ব্লকের রসপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে বলেন ‘‘এলাকার রাস্তা আগাছায় ভরে গিয়েছে। এ বার তো একশোদিনের শ্রমিকদের দিয়ে কাজকরানো যাচ্ছে না।’’ বাগনান-১ ব্লকের সাবসিট পঞ্চায়েতের প্রধান সাদ্দাম হোসেনও বলেন, ‘‘রাস্তার পাশ পার্থেনিয়ামে ভরে গিয়েছে।পরিবেশ দূষণও হচ্ছে। কিন্তু আমাদের হাত-পা বাঁধা।’’
বেহাল রাস্তা নিয়ে নিত্যদিন স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ছেন হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ আমতা-২ ব্লকের ঘোড়াবেড়িয়া চিৎনান এবং ভাটোরা পঞ্চায়েতের কর্তারা। গত বছরের বন্যায় রূপনারায়ণ ও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল ঢুকে এই দুটি পঞ্চায়েতের বহু ঢালাই রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পঞ্চায়েতের দাবি, সেই সব রাস্তা টাকার অভাবে সারানো যাচ্ছে না। আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দেলওয়ার হোসেন মিদ্দা বলেন, ‘‘রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় মানুষকে সমস্যায় পড়েতে হচ্ছে। তাছাড়া এটা ডেঙ্গির মরসুম। নালা সাফাই করতেন একশো দিনের শ্রমিকরা। সেই কাজও হচ্ছে না।’’
এই অর্থাভাবের সময়ে রাজ্য সরকারের তরফে ক্লাবগুলিকে অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একশো দিনের শ্রমিকরা। এক শ্রমিকের ক্ষোভ, ‘‘তৃণমূল নেতাদের মুখে কোনও কথা মানায় না। আমাদের জন্য কাজ যখন আটকে রয়েছে, তখন তাঁরা কেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে টাকার দাবি জানালেন না?’’ অন্য এক শ্রমিকের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলোকে টাকাদিয়ে কিনতে চাইছেন। আমাদের টাকা দিয়ে কোনও লাভ নেই ভাবছেন। পুজোয় আমাদের তো আনন্দের অধিকার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy