গোলমাল: বিক্ষোভ-মিছিল থেকে ছোড়া হচ্ছে ইট। সোমবার, হাওড়া ময়দানে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
রামনবমীর মিছিলে দুষ্কৃতীদের হামলা এবং সেই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্না ঘিরে সোমবারও রণক্ষেত্রের চেহারা নিল হাওড়া ময়দান এলাকা। বিক্ষোভকারীরা দুপুর ১টা থেকে আচমকা বঙ্গবাসী মোড়-সহ গোটা হাওড়া ময়দান চত্বরে অবরোধ শুরু করায় স্তব্ধ হয়ে যায় এলাকা। অবরোধ তুলতে এসে পুলিশ দফায় দফায় লাঠি চালিয়ে এলাকা ফাঁকা করে দেওয়ার চেষ্টা করে। আন্দোলনকারীরা অলিগলিতে ঢুকে পড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করেন বলে অভিযোগ। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ইটের আঘাতে জখম হন এক পদস্থ পুলিশ কর্তা-সহ চার জন। পুলিশ জানায়, এ দিনের ঘটনায় মোট ১২ জনকে আটক করা হলেও পরে ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বক্তব্য, বিনা প্ররোচনায় পুলিশ লাঠি চালিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
রবিবার রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে শিবপুরের জি টি রোডে ধুন্ধুমার বেধে যায়। গোলমাল চলে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। বিজেপির অভিযোগ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ওই শান্তিপূর্ণ মিছিলে দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র ও ইট নিয়ে আক্রমণ করে। আক্রমণের জেরে তাদের ২০ জনেরও বেশি কর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে রাকেশ গুপ্ত নামে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এক বিজেপি কর্মীর আঘাত গুরুতর। বিরোধী দলের কর্মী হলেও রাতেই রাকেশের পাশে থেকে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেশ রাই।
রবিবার রাতের ওই ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন দুপুর ১টার সময়ে বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কয়েকশো কর্মী হাওড়া ময়দানে রাস্তা বন্ধ করে ধর্নায় বসেন। পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সরে যেতে বললে গোলমাল বেধে যায়। উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা বঙ্গবাসী মোড়ে অবরোধ করেন। অবরোধ হটাতে পুলিশ দফায় দফায় লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। অবরোধকারীরা তখন আশপাশের গলিতে ঢুকে পড়েন। অভিযোগ, তাঁরা সেখান থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করলে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা চত্বর। কিছু দোকান ভাঙচুর করারও চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইটের আঘাতে এক পুলিশকর্মীর পা ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। এর পরে পুলিশবাহিনী হাওড়া ময়দান থেকে মল্লিক ফটকের দিকে এগিয়ে গিয়ে লাঠি ও ঢাল হাতে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন গলি ও বহুতল থেকে ইট উড়ে আসতে থাকে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি দেখে এলাকার সমস্ত দোকান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিকেলের পরে ফের দোকান খোলে।
এই ঘটনার পরে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য উমেশ রাই বলেন, ‘‘গত রবিবার রামনবমীর মিছিলে দুষ্কৃতীদের হামলায় প্রায় ১০০ জন জখম হন। এটা সম্পূর্ণ পুলিশের ব্যর্থতা। পুলিশের জন্যই এ দিনও ফের এই ঘটনা ঘটল। এ দিনও আন্দোলনকারীদের উপরে বার বার লাঠিচার্জ করে পুলিশ। বেশ কয়েক জন তাতে আহত হন। পুলিশের এই ভূমিকা আমরা মেনে নেব না।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীরা শুধু অবরোধই করেননি, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করা হয়। বহু পুলিশকর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। ওই সময়ে পুলিশ লাঠি চালাতে বাধ্য হয়েছে। এলাকায় জনজীবন স্তব্ধ হতে বসেছিল এ দিনের আন্দোলনের জেরে। আন্দোলন কোনও ভাবেই শান্তিপূর্ণ ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy