Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
জানেন কি?
History of Mankundu Station

স্টেশন হওয়ার আগেও ট্রেন থামত মানকুন্ডুতে

রেলপথ চালু হলে তিনি ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কামরায় যাতায়াত করতেন। তখন মানকুন্ডু স্টেশন ছিল না। চন্দননগরের পরে ভদ্রেশ্বর স্টেশন। কিন্তু তিনি মানকুন্ডু থেকে উঠবেন।

মানকুন্ডু স্টেশন লাগোয়া মানসিক রোগীদের হাসপাতাল।

মানকুন্ডু স্টেশন লাগোয়া মানসিক রোগীদের হাসপাতাল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৯
Share: Save:

হাওড়া থেকে হুগলি স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল ১৮৫৪ সালের ১৫ অগস্ট। এই শাখায় মানকুন্ডু স্টেশন তৈরি হয় বেশ কিছু বছর পরে। তবে, মানকুন্ডু স্টেশন তৈরি হওয়ার আগেও এখানে ট্রেন থামত এক জনের জন্য। মানে, থামানো হত চেন টেনে।

এখনও স্টেশনের পাশেই একটি প্রাসাদোপম বাড়ি দেখা যায়। সবাই মানসিক রোগীদের হাসপাতাল হিসেবে চেনেন। বাড়িটি ছিল বিখ্যাত ব্যবসায়ী গৌর খাঁয়ের। রেললাইন বসার আগে লাগোয়া কয়েক বিঘে জমিতে তিনি বিশাল বাড়ি, বাগান, জলাশয় প্রভৃতি নির্মাণ করেছিলেন। ব্যবসা সামলানোর জন্য কলকাতায় যেতেন জুড়িগাড়িতে। তাঁর শখ-সৌখিনতা সামলাতে প্রচুর চাকর-বাকর ছিল।

রেলপথ চালু হলে তিনি ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কামরায় যাতায়াত করতেন। তখন মানকুন্ডু স্টেশন ছিল না। চন্দননগরের পরে ভদ্রেশ্বর স্টেশন। কিন্তু তিনি মানকুন্ডু থেকে উঠবেন। তাই এক কর্মচারীকে চন্দননগরে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি সেখানে ট্রেনে চাপতেন। মানকুন্ডু এলে চেন টেনে ট্রেন দাঁড় করালে বাবু গৌর খাঁ উঠতেন। এ জন্য প্রতিদিন বিরাট অঙ্কের জরিমানা দিতে হত তাঁকে। অডিটের সময় বিষয়টি রেলকর্তাদের নজরে আসে। রেল কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে দেখতে এসে মানকুন্ডু স্টেশন তৈরির ব্যাপারটা মঞ্জুর করেন। গৌর খাঁয়ের দেওয়া জমিতেই গড়ে ওঠে মানকুন্ডু স্টেশন। জমিদান ছাড়াও এই স্টেশন তৈরিতে রেলকে অন্যান্য সাহায্যও করেছিলেন গৌর।

রেললাইন স্থাপনের পরে ঘোড়ার গাড়ি বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারত না নীচে গলাপোল হয়ে য়াওয়ায়। কথিত আছে, মেয়ের বিয়ের সময় জামাই মাথা নিচু করে প্রথম শ্বশুরবাড়ি আসবেন, মানতে পারেননি গৌর। রেলকে তিনি চিঠি দেন, সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত মূল রাস্তার উপরে রেললাইন খুলে দিতে হবে। প্রচুর টাকা দিয়ে তিনি রেললাইন খুলিয়েছিলেন। বিলাসে গা ভাসিয়ে এই মানুষটিই পরবর্তী সময়ে কার্যত নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন। খাঁ পরিবারের কেউ বেশি খরচ করলে সাবধান করে দেওয়া হত, ‘সাবধানে খরচ করিস, না হলে গৌর খাঁ হয়ে যাবি’।

(তথ্য: শক্তিপদ ভট্টাচার্য, শিক্ষক ও ভ্রামণিক)

অন্য বিষয়গুলি:

Mankundu Indian Railways
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy