সময়ের ব্যবধান মাত্র ১০ ঘণ্টা। তারই মধ্যে হাওড়ার দু’টি এলাকায় বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল এক মহিলা ও এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহ। একটি ঘটনা ঘটেছে লিলুয়ায়, অন্যটি চ্যাটার্জিহাটে। দু’টি ঘটনাতেই মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা নাগাদ লিলুয়ার শান্তিনগরে একটি পাঁচতলা বহুতলের একতলার একটি ঘরে আগুন লাগে। ওই ঘরে থাকতেন অমিতা জেঠানিয়া (৪২) নামে এক মহিলা। দাউ দাউ করে তাঁর ঘর জ্বলতে দেখে ও মহিলার চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বহুতলের অন্য আবাসিক ও প্রতিবেশীরা। তাঁরাই প্রাথমিক ভাবে জল ও বালি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। এর পরে দেখা যায়, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঘরের মেঝেয় পড়ে রয়েছেন অমিতা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে পরে মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, মা-বাবার মৃত্যুর পরে ওই বহুতলের একতলার একটি ঘরে একাই থাকতেন অমিতা। মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ওই মহিলার ঘরে ছিল না বিদ্যুৎ সংযোগ বা রান্নার বন্দোবস্ত। অন্য আবাসিক ও পড়শিরাই অমিতাকে খাবার দিলে তিনি খেতেন। তবে, প্রতিবেশীরা আরও জানান, ঘরের বাইরে বারান্দায় মাঝেমধ্যে কাগজ, কাঠ, কয়লা জ্বালিয়ে রান্না করতেন অমিতা। তা করতে গিয়ে কোনও ভাবে তাঁর ঘরে আগুন লেগে যায় কিনা, সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্য দিকে, সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ মধ্য হাওড়ার চ্যাটার্জিহাটের তাঁতিপাড়া লেনে একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ৫৭ বছরের এক প্রৌঢ়ের পচাগলা দেহ। তাঁর নাম স্নেহাশিস দত্তগুপ্ত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁতিপাড়া লেনে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন স্নেহাশিস। তিনি আগে থাকতেন কলকাতার সিঁথি এলাকায়। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁতিপাড়া লেনে স্নেহাশিসের ভাড়া বাড়ি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়ানোয় বাড়িওয়ালা থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার করে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে প্রৌঢ়ের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্নেহাশিস একাই থাকতেন। সম্প্রতি তেমন কোনও কাজও করতেন না। দিন দুয়েক আগে ওই প্রৌঢ়কে শেষ বার দেখেছিলেন এলাকাবাসী। পুলিশের ধারণা, দিন দুয়েক আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)