টর্নেডোর তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। কোদালিয়া ২ পঞ্চায়েতের বেনাভারুইতে। —নিজস্ব চিত্র।
দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছিলই। তার মধ্যে শনিবার সকালে একটি টর্নেডোর তাণ্ডবে তছনছ হল হুগলির ত্রিবেণী থেকে চুঁচুড়ার কোদালিয়া ২ পঞ্চায়েতের বেনাভারুই পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা। কোনও হতাহতের খবর না-মিললেও ভেঙে পড়ে বেশ কয়েকটি পুরনো পাঁচিল, উপড়ে যায় গাছপালা, উড়ে যায় টিনের চাল। বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষাবাদেরও ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ন’টা নাগাদ ত্রিবেণীতে গঙ্গার মাঝ বরাবর ওই ঝড় দেখা যায়। তা ফাঁকা মাঠের উপর দিয়ে চুঁচুড়ার কোদালিয়া ২ পঞ্চায়েতের বেনাভারুই এলাকায় এসে পৌঁছয়।
বাঁশবেড়িয়ার পুরপ্রধান আদিত্য নিয়োগী জানান, ত্রিবেণী শ্মশানঘাটের একাংশের টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ ও কেব্ল লাইনের তার ছিঁড়েছে। একটি লোহার বিদ্যুতের খুঁটি বেঁকে গিয়েছে। ত্রিবেণীর একটি অংশ টানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে।
বেনাভারুইয়ে একটি কারখানার টিনের চাল উড়ে গিয়ে একটি গাছের উপরে পড়ে। সেখানে বেশ কয়েকটি ছোট ঘরেরও ক্ষতি হয়েছে। পঞ্চায়েতের একাধিক সদস্যকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। ক্ষয়ক্ষতির ছবি তুলে ব্লক অফিসে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন পঞ্চায়েত সদস্যদের। এলাকার এক চাষি জানান, তাঁর পেঁপে খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক ফলন্ত গাছ উপড়ে গিয়েছে। চুঁচুড়া-মগরা ব্লক অফিসের এক কর্তা জানান, রিপোর্ট পেলে ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখা হবে।
উত্তর চন্দননগর গড়বাটী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষক নিশীথকুমার প্রামাণিকের দাবি, এ দিন ত্রিবেণীতে ওঠা ওই ঝড় টর্নেডোই। তিনি জানান, টর্নেডো তৈরি হয় অনেকটা কালবৈশাখীর নিয়ম মেনে। তবে এ ক্ষেত্রে বায়ুপ্রবাহের জটিলতায় দীর্ঘকায় উল্লম্ব মেঘের ভিতরে ঘূর্ণি তৈরি হয়। সেই ঘূর্ণি একটি সরু ফানেলের আকারে (হাতির শুঁড়ের মতো দেখতে) নেমে আসে মাটির কাছাকাছি। মাটি ছুঁয়েই সেই ঘূর্ণায়মান ফানেল তার কেন্দ্রের দিকে সব কিছু টেনে নেয়। তার ফলে ওই ঘূর্ণায়মান ফানেল যে এলাকা দিয়ে যায় সেখানেই ধ্বংসলীলা চালায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy