শেখ সাদ্দাম হোসেন। নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে পুরশুড়ার সাঁওতা গ্রামের প্রতিবাদী শেখ হাসিবুল হোসেনকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর বাজার থেকে ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে আর এক অভিযুক্ত শেখ আতাবুদ্দিন ওরফে এম বাবুকেও ধরা হয়। এই নিয়ে ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মোট ১৪ জনের মধ্যে ছ’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উপপ্রধানের নানা দুর্নীতি এবং তোলাবাজির প্রতিবাদ করাতেই গত শনিবার সকালে হাসিবুলকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
হুগলির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) অমনদীপ বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছিল। একটি নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর বাজার এলাকা থেকে সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে আর এক অভিযুক্তকেও ধরা হয়েছে।’’ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি জারি থাকছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘পুলিশকে সাধুবাদ দেব। প্রথম থেকেই বলে এসেছি, আবারও বলছি— ওই নৃশংস ঘটনায় পুলিশ একজনকেও ছাড়বে না। তিনি যত বড় নেতা হন। অন্যেরাও ধরা পড়বে।’’
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ১০০ দিনের কাজ-সহ নানা প্রকল্পে উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছিলেন হাসিবুল। তাঁর সঙ্গে অন্য শ্রমিকেরাও উপপ্রধানের ‘অনিয়মের’ প্রতিবাদ করেন। তাতেই বেজায় চটে যান উপপ্রধান। গত শনিবার সকালে সাঁওতা থেকে কিছুটা দূরে একটি খাল সংস্কারের কাজ চলার সময়ে দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে উপপ্রধান শ্রমিকদের মারধর করেন বলে অভিযোগ। সেখানে এসে আক্রান্ত হন হাসিবুল। তাঁকে ধাওয়া করে লাঠি, রড এবং লোহার আঁকশি দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। দাদাকে মারতে দেখে হাসিবুলের ভাই শেখ কিতাবুল বাধা দিতে আসেন। তিনিও প্রহৃত হন। হাসিবুল ওই সন্ধ্যাতেই আরামবাগের একটি নার্সিংহোমে মারা যান। কিতাবুল আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওই এলাকার তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশের দাবি, সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির প্রতিবাদ ছাড়াও সম্প্রতি হাসিবুলের গরু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে তাঁর কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন সাদ্দাম। হাসিবুল বিরোধিতা করেন। গ্রামের কেউ কোনও অজুহাতেই উপপ্রধান বা তাঁর দলবলকে যাতে টাকা না দেন, সে কথাও তিনি বলবেন বলে জানিয়ে দেন। এতে তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়েই ছিলেন উপপ্রধান। শনিবরের ঘটনায় তাতেই আগুনে ঘি পড়ে। পিটিয়ে মারা হয় তাঁকে।
ঘটনার পর শাসক দল ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এর জন্য অপরাধীদের দ্রুত ধরার কথা বলে পুলিশকে বলে। জেলা পুলিশকর্তারা এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডলের নেতৃত্বে অভিযুক্তদের ধরতে একটি দল তৈরি করেন। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ঘটনার পরে উপপ্রধানকে দলের একটি স্থানীয় কর্মসূচিতে এবং জেলা পরিষদের এক সদস্যের সঙ্গেও অভিযুক্তকে দেখা গিয়েছে। তাঁকে গা-ঢাকা দিতে শাসক দলের একাংশ সাহায্য করে বলেও তাঁদের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy