—প্রতীকী চিত্র।
গত শনিবার রাতে লিলুয়ার বেলগাছিয়ার এন রোডে একটি সাট্টার ঠেকে এক ব্যক্তিকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল হাওড়া সিটি পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি দেশি রিভলভার এবং চার রাউন্ড গুলি। ধৃতদের নাম শুভঙ্কর পোল্লে, পীযূষ মণ্ডল ও রাকেশ ঝা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা দাশনগর থানা এলাকার পুরনো দাগি দুষ্কৃতী। আগেও একাধিক বার অস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয়েছে তারা।
তদন্তকারীদের ধারণা, ধৃতদের থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি ওই দিন গুলি চালানোর ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছিল। পুলিশের আরও অনুমান, সাট্টার ঠেকে তোলা তুলতে এসে তা না পাওয়াতেই দুষ্কৃতীরা অষ্ট শী নামে ওই ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিও সাট্টার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের খাতায় অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে দাশনগরের বাড়ি থেকে প্রথমে শুভঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছে মেলে গুলি ভর্তি দেশি রিভলভার। শুভঙ্করকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দাশনগরের বি রোডের বাড়ি থেকে পীযূষকে এবং বেলগাছিয়ার খালধারপাড়া থেকে রাকেশকে ধরা হয়। রাকেশের কাছ থেকে উদ্ধার হয় আরও তিন রাউন্ড গুলি। সেই সঙ্গে ওই দিনের ঘটনায় যে মোটরবাইকে চেপে দুষ্কৃতীরা এসেছিল, সেটিও আটক করেছে পুলিশ।
ধৃত তিন জনকে এ দিন হাওড়া আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। কোর্টে সওয়ালে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা জানান, ধৃতেরা অস্ত্র কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। কারণ, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ধৃতেরা বিভিন্ন এলাকায় সাট্টার ঠেক চালিয়ে প্রচুর টাকা লেনদেন করে। তদন্তে আরও উঠে এসেছে, অষ্টও ওই সব ঠেকে সাট্টার প্যাড লিখতেন।
এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে হাওড়া সিটি পুলিশের যুগ্ম নগরপাল কে সবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘লিলুয়ায় যুবককে গুলি চালনার ঘটনার তদন্তে লিলুয়া থানা, দাশনগর থানা এবং হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দাদের নিয়ে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল। সেই দলটিই আগ্নেয়াস্ত্র সমেত তিন কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে ধরেছে। যারা এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত।’’
ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, গত শনিবার সন্ধ্যায় লিলুয়ার এন রোডে অষ্ট যখন আড্ডা মারছিলেন, সেই সময়ে শুভঙ্কর ও পীযূষ এসে তোলার টাকা চায়। অষ্ট টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় অভিযুক্তেরা। আহত অষ্টের সঙ্গে তিন দুষ্কৃতীর কী সম্পর্ক, কেন তারা অষ্টের কাছে টাকা চেয়েছিল, কেনই বা তাঁকে গুলি করল— সে সব খতিয়ে দেখছেন হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা।
প্রসঙ্গত, গত তিন মাসে হাওড়া সিটি পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ৩৭টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৬৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে গত ১৬ মার্চ ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সোমবার, অর্থাৎ ৮ এপ্রিল পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২১ রাউন্ড গুলি এবং ২৫টি অস্ত্র। ধরা পড়েছে ৩৬ জন দুষ্কৃতী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy