বাজেয়াপ্ত হওয়া ওয়ান শটার
রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সবাই। হঠাৎ গুলির শব্দ!
বুধবার চণ্ডীতলার বাক্সা রানাপাড়ার বাসিন্দা শ্রীমন্ত সাঁতরা এবং তাঁর পরিবারের লোকজনের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল ওই শব্দে। তাঁরা দেখেন, কেউ ঘরের চালের টালি খুলে ওই কাণ্ড ঘটিয়েছে। বেরিয়ে দেখেন, তিন জন পালাচ্ছে। ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বৃহস্পতিবার দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম অমল মুহুরি এবং বাবন দে। অমলের বাড়ি চণ্ডীতলার পাঁচঘড়ায়। বাবন রিষড়ার সুভাষনগর অরবিন্দ পল্লির বাসিন্দা।
তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, অমল জমির দালাল। চাষের জমি দখল করতে না পেরে শ্রীমন্তকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল সে। এ জন্য তিন জন ‘সুপারি কিলার’ নিয়োগ করেছিল। বাবন তাদেরই এক জন। গুলি অবশ্য কারও গায়ে লাগেনি।
হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জমি নিয়ে বিবাদের জেরে শ্রীমন্তকে মারার পরিকল্পনা করেছিল অমল। এ জন্য তিন জন সুপারি কিলার ভাড়া করেছিল। সুপারি বাবদ চার লক্ষ টাকায় রফা হয়েছিল। আরও দু’জনকে খোঁজা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাত ৩টে নাগাদ বাবন-সহ তিন জন শ্রীমন্তের বাড়িতে যায়। দু’জন জানলা বেয়ে চালে ওঠে। অভিযোগ, টালি সরিয়ে এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে তারা। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুষ্কৃতীরা পালায়।
শ্রীকান্ত চণ্ডীতলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ৪ দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠান।
শ্রীমন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মী। বাড়ির কাছেই ১১ কাঠা জমিতে চাষও করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাপ-ঠাকুর্দার সময় থেকে ওই জমির আমরা ভাগচাষি। অমল ওই জমি দখল করতে চেয়েছিল। কয়েক মাস আগে বাড়িতে এসে আমাকে শাসিয়েও যায়। কয়েক দিন আগে বাবন ওই জমি কেনার ছলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। বুধবার বিকেলে বাড়িতেও আসে। এখন বুঝতে পারছি, ঘরের কোন জায়গায় খাট, তা দেখতে এসেছিল। পালানোর সময় ওকে চিনতে পারি।’’
ঘটনার রাতে স্ত্রী এবং বড় মেয়েকে নিয়ে একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন শ্রীমন্ত। পাশের ঘরে ছোট মেয়ে ঘুমোচ্ছিল শ্রীকান্তের ভাইয়ের সঙ্গে। পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় বরাতজোরে বেঁচেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, পালানোর সময় দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার কোনও ভাবে ঘটনাস্থলেই পড়ে গিয়েছিল। সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় বাবন বলে, ‘‘খুনের জন্য অমল আমাদের টাকা দিয়েছিল। চার দিন অমলের বাড়িতেই ছিলাম। ২০ হাজার টাকা দিয়েছিল।’’ অমল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তার দাবি, ‘‘বাবন আমাকে ফাঁসিয়েছে। ওকে চিনিই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy