হাওড়া পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
এলাকার জলকষ্ট দূর করার জন্য নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজের উদ্বোধন করতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে পুকুর বোজানোর চেষ্টা রুখে দিলেন হাওড়া পুরসভার আধিকারিকেরা। শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের শমীচণ্ডী সরণি এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় আগে ১৩টি পুকুর ছিল। যার ফলে বৃষ্টি হলেও জল জমত না। বর্তমানে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির মদতে প্রায় এক বিঘার একটি পুকুরের অধিকাংশ বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখার পরে পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পের আওতায় এনে অবিলম্বে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি, জমির মালিকদের পুরসভায় ডেকে পাঠাতেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ওয়ার্ডের কামারডাঙা এলাকা সংলগ্ন শমীচণ্ডী সরণির বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, পদ্মপুকুর প্রকল্পের জল সর্বত্র পৌঁছচ্ছে না। প্রতি গ্রীষ্মে সেখানে জলের সঙ্কট এতটাই তীব্র আকার ধারণ করে যে, বাসিন্দাদের জল কিনে খেতে হয়। অন্য দিকে, এলাকার অধিকাংশ পুকুর বুজিয়ে বহুতল তৈরি হওয়ায় বর্ষাকালে একটু বেশি বৃষ্টি হলেই রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আগে ওই জল এলাকার বিভিন্ন পুকুরে গিয়ে পড়ত, যেগুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি সুব্রত পোল্লে বলেন, ‘‘এলাকার জলসঙ্কট দূর করতে কেএমডিএ পাইপলাইন বসিয়েছিল। কিন্তু অবৈজ্ঞানিক ভাবে তা বসানোয় সকলের বাড়িতে জল পৌঁছয় না। তাই পুরসভার কাছে আবেদন করেছিলাম আরও একটি পাইপলাইন বসানোর জন্য। সেই কাজ পুরসভা এ দিন শুরু করল।’’
স্থানীয় বাসিন্দা বাপি দত্ত বললেন, ‘‘এলাকায় একটিমাত্র পুকুর অবশিষ্ট ছিল। কয়েক বছর আগেও সেখানে আমরা স্নান করতাম। বহু মানুষ ব্যবহার করতেন। সেটিও ক্রমাগত আবর্জনা ফেলে বুজিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।’’ পুকুর বোজানোর অভিযোগ পেয়ে পুর চেয়ারপার্সন বিভিন্ন দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে সরেজমিনে বিষয়টি দেখতে যান। দেখা যায়, প্রায় এক বিঘা পুকুরটির অর্ধেক বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। তৈরি হয়েছে কারখানার শেড। পুকুরের যে অংশটি কচুরিপানায় ঢাকা, সেখানেও নির্মাণ বর্জ্য ফেলে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। এলাকার বাসিন্দা সুভাষ অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘পুকুর বোজানো বন্ধ করতে পুরসভাকে বার বার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক প্রভাবশালী ব্যক্তির অদৃশ্য হাত বাধা দেওয়ায় আটকানো যায়নি। এ বার হয়তো যাবে।’’ পুর চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘পুকুরের বোজানো অংশ জেসিবি দিয়ে খুঁড়ে ফেলা হবে। পুরসভার ‘জল ধরো, জল ভরো’ বিভাগকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জমিটির মালিককে পুকুরের সমস্ত কাগজপত্র সমেত পুরসভায় ডেকে পাঠানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy