Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sukanta Majumdar

Sukanta Majumdar: শিল্পের বধ্যভূমি! বাণিজ্য সম্মেলনের দিনে সিঙ্গুরে গিয়ে মমতাকে খোঁচা বিজেপির সুকান্তর

সিঙ্গুরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে পাল্টা তোপ দেগেছেন বেচারাম মান্নাও।

সিঙ্গুরে সুকান্ত মজুমদার।

সিঙ্গুরে সুকান্ত মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২২ ১৩:০৯
Share: Save:

শিল্পের বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে সিঙ্গুর। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)-এর উদ্বোধনের দিনে সিঙ্গুরে পা রেখে রাজ্যের শাসক দলকে এই ভাষাতেই আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বুধবার থেকে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে দু’দিনের বাণিজ্য সম্মেলন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে একই দিনে সিঙ্গুর যাত্রা সুকান্তের। অন্য দিকে, বুধবারই দলীয় বিধায়কদের নিয়ে ডেউচা-পাঁচামি যাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, রাজ্যের উদ্যোগে বাণিজ্য সম্মেলন শুরুর দিনেই এই কর্মসূচি পালন করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। যদিও সুকান্তের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন সিঙ্গুরের তৃণমূল নেতৃত্ব।
বুধবার দলবল নিয়ে সিঙ্গুরের খাসেরভেড়ি এলাকা পরিদর্শনে যান সুকান্ত। সিঙ্গুর সফরের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সুকান্ত কটাক্ষের সুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে এই এলাকাকে উনি শিল্পের বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিলেন। তার পর উনি বলেছিলেন, কাশফুল থেকে লেপ-বালিশ তৈরি করার কথা। সে সব কিছু হয়েছে কি না তা দেখতে আমরা এখানে এসেছিলাম। দেখলাম, সে সব কিছুও হয়নি। কতগুলি ভেড়ি হয়েছে দেখলাম, মাননীয় বিধায়ক বেচারাম মান্নার অনুপ্রেরণায়। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাও হয়তো আছে।’’

সুকান্তের বক্তব্যে উঠে এসেছে ডেউচা-পাঁচামি প্রসঙ্গও। তাঁর কথায়, ‘‘ডেউচা-পাঁচামিতে কারও জমি জোর করে নেওয়া যাবে না। এটা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত নীতি। আদিবাসীদের জমি জোর করে নেওয়া যায় না। যে প্যাকেজের কথা মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তা আগে দিতে হবে। তার পর জমি নিতে হবে।’’ সুকান্তের অভিযোগ, ‘‘ডেউচা-পাঁচামিতে আদিবাসীদের উৎখাত করে পাথর লুঠের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বড় বড় টাইকুনদের হাতে এই জমি তুলে দেওয়াই উদ্দেশ্য।’’ সুকান্তের আরও অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। সিন্ডিকেট রাজ এবং শাসকদলের দাদাগিরি বন্ধ না হলে এ রাজ্যে শিল্পায়ন হবে না। কী ভাবে শিল্প হবে তা রাজ্য সরকারকে ভাবতে হবে। আমাদের মানুষ দায়িত্ব দেয়নি। আমরা দায়িত্ব পেলে আমাদের মতো করে শিল্পনীতি তৈরি করব।’’

সিঙ্গুরে শিল্প স্থাপন নিয়ে বিজেপির ‘পরিকল্পনা’র কথাও শুনিয়েছেন সুকান্ত। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সকলেই শিল্পের জন্য চেষ্টা করব। তবে রাজ্য সরকার এই জমির মালিক। আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যদি ভাবেন সবই তিনি বোঝেন, তা হলে ওই রকমই হবে। বিজেপির সরকার এলে কৃষকেরা শিল্প করতে চাইলে আমরা ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে শিল্প করে দেখাব। আমি নিজে শিল্পপতি ডেকে আনব, তেমন বিনিয়োগকারী আছেন।’’

সুকান্তের বক্তব্য নিয়ে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের নেতা তথা রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার রাজনীতিতে শিশু। আমরা সিঙ্গুর আন্দোলন যখন শুরু করেছিলাম তখন উনি হয়তো রাজনীতিতে আসেননি। সিঙ্গুর আন্দোলনের মুখ্য বিষয় ছিল, তিন ফসলি জমিতে শিল্প করা যাবে না। আমরা সেই দাবিতে অনড় ছিলাম। সুপ্রিম কোর্টও সেই দাবিতে মান্যতা দিয়েছে। সুকান্তের পায়ের তলার মাটিতে জমি নেই। যে রাজনৈতিক দল সিঙ্গুর নিয়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেছে, তারা রসাতলে গিয়েছে। সুকান্ত মজুমদার যেখানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলেন, তার আশপাশের জমি পেট্রল পাম্প, কারখানার জন্য কিনে রাখা আছে। আর কৃষকেরা নিজেদের জমি চাষ করছেন। সেটা না দেখতে পেলে ওঁর পাওয়ারফুল চশমা ব্যবহার করা উচিত। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যে ভাবে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এসেছেন তাতে সুকান্ত মজুমদারের জীবদ্দশায় এ রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতায় আসা হবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sukanta Majumdar TMC becharam manna BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy