চন্দননগর পুর-ভবন। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
শাসক দলের দলাদলিতে থমকে গিয়েছিল পরিষেবা। তার জেরে তিন বছর আগে চন্দননগরে পুরবোর্ড ভেঙে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তার পরে নির্বাচিত বোর্ড ছাড়াই পুরসভা চলেছে। এ নিয়ে বিরোধী দল তো বটেই, জনমানসেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছে, আগামী ২২ জানুয়ারি চন্দননগরে পুরভোট হবে। এ নিয়ে শহরে চর্চা শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে সব দলই। তৃণমূলের দাবি, আরও বেশি জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় ফিরবে। পক্ষান্তরে, বিরোধীরা বলছেন, টক্কর দিতে তৈরি।
২০১৮ সালের অগস্টে পুরবোর্ড ভেঙে রাজ্য সরকার পুর-কমিশনার স্বপন কুণ্ডুকে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। পরে, ভেঙে দেওয়া বোর্ডের মেয়র রাম চক্রবর্তী এবং একাধিক মেয়র-পারিষদকে নিয়ে পুরসভা পরিচালনার কমিটি করা হয়। রামবাবু এখন পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান।
বিরোধীদের অভিযোগ, যাঁরা চালাতে না পারায় পুরবোর্ড ভাঙা হল, তাঁদের ফের দায়িত্ব দেওয়া হাস্যকর। ৩৩টি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধির বদলে অল্প কয়েক জনের পক্ষে সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তা হয়ওনি। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘তিন বছর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। জনগণ সব দেখেছেন, দেখছেন। জনগণই বিচার করবেন।’’
তৃণমূলের একাংশের মধ্যেও এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। এক নেতার কথায়, ‘‘কাউন্সিলর না থাকায় মানুষের নানা সমস্যা হয়েছে। শংসাপত্র নিতে বা আর পাঁচটা মামুলি দরকারেও পুরসভায় ছুটতে হয়েছে। প্রশাসকমণ্ডলী নিয়ে জনমানসে ভাল বার্তা যায়নি। টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে দলের এটা মাথায় রাখা উচিত।’’ বিগত বোর্ডের কারা টিকিট পাবেন আর কারা পাবেন না, তা নিয়ে শাসক শিবিরে জল্পনা তুঙ্গে।
অন্য দিকে, বিগত পুরবোর্ডের বিরোধী দলনেতা, সিপিএমের রমেশ তিওয়ারির ক্ষোভ, ‘‘ওদের মধ্যে ভাগাভাগিতে বোর্ড ভাঙা হল। ভোটে জিতে আমাদেরও সরতে হল। ভোট না করে বেআইনি ভাবে পুরসভা চালানো হয়েছে। মানুষ পরিষেবা পাননি।’’
অভিযোগ গায়ে মাখছেন না রামবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘সেই সময় বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির জন্য আমিই ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম, পুরসভা চালানো সম্ভব হচ্ছে না। পরিষেবায় কিন্তু খামতি নেই। লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনে আমরাই ভোট চাইতে গিয়েছিলাম। ভুল বুঝলে মানুষ প্রত্যাখ্যান করত। করেনি। আর, দলে কিছুটা বিরোধিতা থাকে। সেটা নিয়েই চলতে হবে।’’
প্রশাসক যাই বলুন, সাধারণ মানুষের অসন্তোষ আছেই। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানার্জিপাড়ার বাসিন্দা বিজয় ধল বলেন, ‘‘রাস্তাঘাট, নর্দমা সাফাই নিয়মিত হয় না। কাউন্সিলর না থাকায় ছোটখাটো কাজেও হয়রান হতে হয়।’’ ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লি উত্তরপাড়ার মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ছোটখাট কাজেও বিধায়কের অফিসে যেতে হয়েছে। কিন্তু, সবসময় তাঁকে পাওয়া যায় না। ভাগাড়ের দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy