প্রতিবাদ: মিল সংলগ্ন জিটি রোড অবরোধ শ্রমিকদের। রবিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটের মুখে বন্ধ হয়ে গেল রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিল। শনিবার রাতে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। মূলত আর্থিক দুরবস্থার কারণে কাঁচা পাট কেনার পরিস্থিতি না-থাকার পাশাপাশি শ্রমিকদের একাংশের অসহযোগিতাকে মিল বন্ধের কারণ হিসেবে দাবি করেছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বেকায়দায় পড়েছেন বহু শ্রমিক। তাঁদের অভিযোগ, একতরফা ভাবে মিল বন্ধ করা হয়েছে। প্রতিবাদে রবিবার পথ অবরোধ করেন তাঁরা।
সমস্যা সমাধানে তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকে প্রশাসন। দুপুরে শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের দফতরে বৈঠক হয়। সেখানে মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী, শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম-কমিশনার ত্রিদিবেশ চট্টোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস উপস্থিত ছিলেন। মিলের দুই কর্তা এবং তিনটি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রমিক নেতারা অবিলম্বে মিল খোলার আবেদন জানান। মিল কর্তৃপক্ষ জানান, আর্থিক সঙ্কট কিছুটা কাটিয়ে নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই মিল খোলার চেষ্টা করবেন। ঠিক হয়েছে, আগামী বৃহস্পতি অথবা শুক্রবার কলকাতায় শ্রম দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। সেখানেই জট খোলার চেষ্টা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আশা করছি, ওই বৈঠকেই সমস্যা মিটে যাবে।’’
বেশ কিছু দিন ধরেই ওই মিলে শ্রমিক-মালিক বিরোধ মাথাচাড়া দিয়েছে। বকেয়া পাওনাগণ্ডা-সহ নানা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শ্রমিক সংগঠন। শ্রমিকদের অসহযোগিতার অভিযোগে গত ২১ ডিসেম্বরও মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে পাঁচ দিন পরে মিল খোলে। ফের অচলাবস্থা তৈরি হল।
শনিবার রাত ১০টা নাগাদ মিল বন্ধের নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। পার্সোনেল ম্যানেজারের সই করা নোটিসে জানানো হয়েছে, কাঁচা পাটের দাম এত বেড়েছে যে তা কেনা সংস্থার সাধ্যের বাইরে। কেননা, সংস্থা আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। এর পাশাপাশি কম উৎপাদনশীলতা এবং শ্রমিক সংগঠনের কিছু প্রতিনিধির অসহযোগিতা রয়েছে। এই অবস্থায় মিল চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণেই মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত। তবে, উদ্ভুত পরিস্থিতি শীঘ্রই কাটিয়ে ওঠা যাবে বলেও নোটিসে কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করেছেন।
মিল বন্ধের কথা জানাজানি হতে শ্রমিক মহল্লায় অসন্তোষ দেখা দেয়। রবিবার সকালে মিল সংলগ্ন জিটি রোড অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। যানজট হয়। শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে জানান, অবিলম্বে প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করে মিল খোলার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। জেলা এআইটিইউসি সম্পাদক প্রাণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘শ্রমিকদের পেটে এ ভাবে লাথি মারা চলবে না। এখন চটের বস্তার বরাত যথেষ্ট রয়েছে। শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ উৎপাদন চালু রাখুন। আশা করছি আগামী বৈঠকেই সমস্যা মিটিয়ে মিল খোলার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy