কর্মীর অভাব হাওড়ার পঞ্চায়েতে। — ফাইল চিত্র।
একদিকে নিজস্ব তহবিল মজবুত নয়। তার উপরে কর্মিসঙ্কটে ভুগছে হাওড়ার প্রায় প্রতিটি পঞ্চায়েত। পরিষেবা পেতে নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ গ্রামবাসী। সমস্যা কবে মিটবে, তার কোনও দিশা মিলছে না।
প্রতিটি পঞ্চায়েতে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় চারটি স্তরে মোট সাত জন করে কর্মী থাকার কথা। শীর্ষে একজন নির্বাহী সহায়ক, তারপরে সচিব, তার পরে দু’জন করে পঞ্চায়েত সহায়ক এবং শেষ স্তরে তিন জন করে পঞ্চায়েত কর্মী।
কিন্তু হাওড়া জেলার মোট ১৫৭টি পঞ্চায়েতের প্রতিটি ক্ষেত্রে একেবারে নীচের দু’টি স্তরে অন্তত একজন করে কর্মী থাকলেও বাকি দু’টি স্তরে বহু শূন্য পদ রয়ে গিয়েছে। নিয়োগ নেই দীর্ঘদিন। ফলে, সমস্যা বাড়ছে। প্রভাব পড়ছে প্রশাসনিক কাজে। এক-এক জন নির্বাহী সহায়ককে একাধিক পঞ্চায়েতের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। কোথাও তিনি যাচ্ছেন সপ্তাহে এক বা দু’দিন, কোথাও মাসে একদিন। এ কথা মানছেন জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কর্তারা।
নির্বাহী সহায়কের উপরেই পঞ্চায়েত পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব থাকে। সবচেয়ে বড় দায়িত্ব অর্থ সংক্রান্ত। প্রধানের সঙ্গে তিনিই চেক সই করার অধিকারী। এই দু’জনের সই ছাড়া পঞ্চায়েতের কোনও টাকা তোলা যায় না। এ ছাড়া কাজের সামগ্রিক পরিকল্পনা করা, তা সঠিক ভাবে রূপায়ণ হচ্ছে কি না দেখা, কোনও অভিযোগ এলে তা গ্রামে গিয়ে সরেজমিন তদন্ত করা— এইসব কাজ করতে হয় নির্বাহী সহায়কদের।
কিন্তু হাওড়ায় ১৫৭টি পঞ্চায়েতে মোট নির্বাহী সহায়ক রয়েছেন মাত্র ৭০ জন। তাঁদের একাধিক পঞ্চায়েতের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে বলে একটি নির্দিষ্ট পঞ্চায়েতের চেক সই অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে যাচ্ছে। ঠিকা সংস্থা কাজ করেও সময়ে প্রাপ্য টাকা পাচ্ছে না। অনেক শংসাপত্রেও নির্বাহী সহায়কের সই লাগে। তা-ও অনেক ক্ষেত্রে সময়ে হচ্ছে না। ফলে, সাধারণ মানুষ হয়রানিরশিকার হচ্ছেন।
চেক সই বাদ দিয়ে নির্বাহী সহায়কদের মতোই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হয় সচিবদের। কিন্তু তাঁদের ঘাড়েও একাধিক পঞ্চায়েতের দায়িত্ব বর্তেছে। ফলে, এ ক্ষেত্রেও অনেক কাজ সময়ে শেষ হচ্ছে না।
কেন এই হাল?
জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, হাওড়ার পঞ্চায়েতগুলিতে পঞ্চায়েত কর্মী পদে শেষবার নিয়োগ হয় ২০০৯ সালে। ২০১২-তে শেষবার নির্মাণ সহায়ক পদে নিয়োগ হয়েছিল। কিন্তু নির্বাহী সহায়ক, সচিব এবং পঞ্চায়েত সহায়ক পদে কোনও নিয়োগ হয়নি। ফলে, যাঁরা অবসর নিয়েছেন, সেই সব পদ পূরণ হয়নি। উল্টে বছর ছয়েক আগে পঞ্চায়েত কর্মীদের এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলি নীতি চালু হয়। তার সুযোগ নিয়ে ভিন জেলার অনেক কর্মী বদলি নিয়ে চলে যান। তার ফলেও অনেক পদ খালি হয়। কর্মী নিয়োগে অনুমতি চেয়ে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে চিঠি পাঠানো হলেও উত্তর আসেনি। ফলে, থমকে গিয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
কাজ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন বর্তমান কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy