২০১৭ সালে ৪১৯ জনকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। ফাইল চিত্র।
চুক্তি নবীকরণ না হওয়ায় কার্যত পথে বসেছেন হাওড়া পুরসভার ৪১৯ জন অস্থায়ী কর্মী। তিন মাস কাটতে চললেও বেতন না হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। ওই কর্মীদের অভিযোগ, সমস্যার কথা পুরকর্তা-সহ জেলার তৃণমূল নেতাদের একাধিক বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার কর্মী সংগঠন। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে ভুক্তভোগী কর্মীদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের নেতৃত্ব।
হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৩ সালে তৃণমূল পুরবোর্ড দখল করার পরে দফায় দফায় চুক্তিভিত্তিক কয়েক হাজার কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছিল। পুরভোট হওয়ার আগের বছর, ২০১৭ সালে ৪১৯ জনকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। তাঁদের মধ্যে উচ্চশিক্ষিত বহু যুবক-যুবতী রয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ওই নিয়োগে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। তার পর থেকেই এই নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল নিয়ে প্রতি বছর নবীকরণের সময়ে শুরু হয় টালবাহানা। চলতি বছরেও যার ব্যতিক্রম হয়নি।
পুরসভা সূত্রেই জানা যাচ্ছে, চুক্তি নবীকরণ না হওয়ায় ৪১৯ জনের মধ্যে বেশ কয়েক জন ইতিমধ্যেই কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে কাজ করছেন ৩৫০ জন। এমনই এক কর্মী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘গত ডিসেম্বরে আমাদের চুক্তি নবীকরণের কথা ছিল। আচমকাই তা আটকে দেওয়া হয়। তার পরে তিন মাস বেতন না দিয়েই কাজ করানো হচ্ছে। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব।’’
হাওড়া পুরসভার আইএনটিটিইউসি পরিচালিত কর্মী সংগঠন ‘হাওড়া পৌর স্থায়ী কর্মচারী সমিতি’র সহ-সভাপতি গুরুচরণ চট্টোপাধ্যায় জানান, স্বাস্থ্য, রাস্তা, নিকাশির মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দফতরে ২০১৭ সালে সাত-আট হাজার টাকা বেতনের বিনিময়ে ওই ৪১৯ জন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছিল। কোভিডের সময়ে তাঁরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন। অথচ তাঁদেরই মাসের পর মাস বেতন না-দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। গুরুচরণবাবু বলেন, ‘‘এটা মেনে নেওয়া যায় না। পুর কমিশনারকে বার বার বিষয়টি জানানো হয়েছে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরেও বলা হয়েছে। আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’
এই প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানে পুরসভার তরফে যা যা করণীয়, ইতিপূর্বেই করা হয়েছে। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নিজে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। চুক্তিভিত্তিক ওই কর্মীদের ফাইল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে, তার জন্য নিয়মিত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy