উদ্বোধনের অপেক্ষায় রবীন্দ্রভবন। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে রিষড়া রবীন্দ্রভবন। আজ, শনিবার তার উদ্বোধন। খুশি হুগলির গঙ্গাপাড়ের এই শহরের সংস্কৃতিমনা লোকজন। তবে, এ জন্য তাঁদের অপেক্ষা করতে হল প্রায় আট বছর। কারণ, জীর্ণ প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারের কারণে এই দীর্ঘ সময় বন্ধই ছিল।
পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলছেন, করোনা-সহ নানা কারণে সংস্কারের কাজ দীর্ঘায়িত হয়েছে। তবে, খানিক দেরিতে হলেও রবীন্দ্রভবন নব কলেবরে মানুষের জন্য চালু করতে পেরে পুর-কর্তৃপক্ষ আনন্দিত। পুরপ্রধানের কথায়, ‘‘রবীন্দ্রভবনকে কেন্দ্র করে রিষড়ার সংস্কৃতি চর্চার যে ধারাবাহিকতা, তা বজায় থাকবে। সব ধরনের ক্লাব-সংগঠন যাতে এখানে অনুষ্ঠান করতে পারে, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই ভাড়া ধার্য করা হবে।’’ ভবনটি সংস্কারে প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
১৯৭৫ সালে রিষড়া স্টেশনের কাছেই রবীন্দ্রভবনের দ্বারোদঘাটন করেন তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ভোলানাথ সেন। তবে, পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ছিল। শব্দ ব্যবস্থাপনা আধুনিক ছিল না। সব অংশের দর্শকাসন থেকে পুরো মঞ্চ দেখা যেত না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহটি জীর্ণ হয়ে পড়ে। পলেস্তারা খসে পড়তে থাকে। ২০১৫ সাল নাগাদ সংস্কারে হাত দেয় পুরসভা। কিন্তু, বারে বারেই কাজ থমকে যায়। শহরে সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে যুক্ত লোকজন এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অবশেষে সেই কাজ শেষ হয়েছে।
পুরপ্রধান জানান, প্রেক্ষাগৃহটি কেন্দ্রীয় ভাবে বাতানুকূল করা হয়েছে। শব্দ ব্যবস্থাপনা, আলো উন্নতমানের করা হয়েছে। তবে, ৬১৭ থেকে কমিয়ে চেয়ার থাকছে ৫৩০টি। অপেক্ষাকৃত ভাল চেয়ার বসানোয় বাড়তি জায়গা লেগেছে। সেই কারণেই চেয়ারের সংখ্যা কিছু কমেছে। তা ছাড়া, প্রেক্ষাগৃহের সব অংশ থেকে মঞ্চ পুরোপুরি দেখা যাবে। আজ বিকেলে প্রেক্ষাগৃহের উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত থাকবেন বিধায়ক সুদীপ্ত রায়। শহরের সাংস্কৃতিক কর্মীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে পুরপ্রধান জানান।
সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র বলতে রবীন্দ্রভবনই কার্যত রিষড়ার সবেধন নীলমণি। ভবনটি বন্ধ থাকায় সংস্কৃতি চর্চায় অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন সাংস্কৃতিক কর্মীরা। ইংরেজি প্রবাদ আউড়ে সাংস্কৃতিক কর্মীদের কেউ কেউ বলছেন, কখনওই না
হওয়ার থেকে দেরিতে হওয়া ভাল। ফলে, তাঁরা আনন্দিত। এখন, পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি অনুযায়ী সব ব্যবস্থা যথাযথ হলেই হয়!
শহরের বর্ষীয়ান নাট্য পরিচালক তথা অভিনেতা স্বপনকুমার বসু ওরফে বড়দার কথায়, ‘‘বড় আনন্দের বিষয়। আফশোস, অনেকেই দেখে যেতে পারলেন না। আগে পুরসভার উদ্যোগে রবীন্দ্রভবনে নাটকের উৎসব বা প্রতিযোগিতা হত। খুব ভাল লাগবে, তেমনটা যদি আবার হয়।’’
ফের পূর্ণ হবে দর্শকাসন। নাচ-গান-আবৃত্তি- শ্রুতিনাটক-নাটকের শিল্পীরা মগ্ন হবেন মঞ্চে। প্রতীক্ষা শুধু পর্দা ওঠার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy