বহিরা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য শেখ সাবির আলির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। ছবি: সুব্রত জানা
গ্রামে গ্রামে ‘আবাস প্লাস’ প্রকল্পে প্রকৃত উপভোক্তা যাচাইয়ের কাজ চলছে। এর মধ্যে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বহিরা পঞ্চায়েতের তরফে আবাস যোজনার একটি উপভোক্তা-তালিকা সামনে আসায় বুধবার এখানকার জমাদারপাড়ায় স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শেখ সাবির আলির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখালেন জনাপঞ্চাশ গ্রামবাসী।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তালিকায় তাঁদের অনেকেরই নাম নেই। অথচ, সাবিরের স্ত্রী ও ভাইদের নাম রয়েছে। জাহিরা বেগম নামে এক বিক্ষোভকারীর খেদ, ‘‘শিশুসন্তানদের নিয়ে নিয়ে ত্রিপলঘেরা ঘরে আছি। পঞ্চায়েত সদস্যকে বারবার বলা সত্ত্বেও ঘর হয়নি। অথচ, তাঁর পরিবারের সদস্যেরা ঘর পাচ্ছেন।’’ শেখ নাজির হোসেন নামে আর এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘এ দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে, যাতে গ্রামের প্রকৃত গরিব মানুষ আবাস প্রকল্পে ঘর পান। সেখানে কোনও রাজনীতি চলবে না। অথচ, দেখা যাচ্ছে, যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তাতে অনেক প্রকৃত গরিব মানুষের নাম নেই।’’
অভিযোগ মানেননি সাবির। তাঁর দাবি, ‘‘যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তা চূড়ান্ত নয়। চার বছর আগের। তার উপর সমীক্ষা চলছে। ওই তালিকায় অনেক প্রকৃত গরিব মানুষের নামই আছে। আমার স্ত্রীর নাম থাকলেও ভাইদের নাম নেই। অ্যাম্বুল্যান্স চালিয়ে রোজগার করি। নিজের কোনও ঘর নেই। স্ত্রীর নাম তালিকায় থাকলে দোষটা কোথায়? যাঁদের ঘর নেই, আগামী দিনে তাঁদের ঘর করে দেওয়ার চেষ্টা চলবে।’’ বিক্ষোভকারীরা বিরোধী দলের বলেও দাবি করেছেন সাবির। তবে, বিক্ষোভের সময় কোনও দলীয় পতাকা দেখা যায়নি। কোনও বিরোধী দলই বিক্ষোভে শামিল হওয়ার কথা মানেনি।
পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের আমিনা বেগমের গলাতেও সাবিরের সুরই শোনা গিয়েছে। তিনিও বলেন, ‘‘ওই তালিকার ওপরে ব্লক প্রশাসন ও আশাকর্মীরা সমীক্ষা চালাচ্ছে। তারপরেই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে। বিরোধীরা ভোটের আগে মানুষকে খেপিয়ে তোলার জন্য এই কাজ করছে। তাতে কোনও লাভ হবে না।’’
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় গ্রামের যে সব গরিব মানুষের নাম ছিল, তাঁদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, বহু গরিব গৃহহীন মানুষ আছেন, যাঁদের নাম ২০১১ সালের তালিকায় ছিল না। ফলে, তাঁরা বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। তাঁদের জন্য ২০১৮ সালের শেষের দিকে কেন্দ্র ফের একটি সমীক্ষা করে। সেই তালিকার ভিত্তিতে গৃহহীনদের বাড়ি তৈরির জন্য ‘আবাস প্লাস’ (প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের পরবর্তী সংযোজন) প্রকল্পটি করে কেন্দ্র। এই প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষা শুরু হয়েছে। সমীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই আসল তালিকা প্রকাশ হবে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের উলুবেড়িয়া দক্ষিণ লোকাল কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামিউস শরিয়ত মল্লিক বলেন, ‘‘আবাস প্লাস প্রকল্পে ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও দলবাজি যেন না হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের সঠিক গাইডলাইন মেনে প্রকৃত গরিব মানুষ যেন ঘর পান, তা দেখা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy