(বাঁ দিকে) সৌরভ কুমার। (ডান দিকে) কন্যাকে নিয়ে গবেষক দম্পতি সোমোদয় হাজরা এবং জয়িতা দত্ত হাজরা। —নিজস্ব চিত্র।
যুদ্ধ চলছে ইজ়রায়েলে। প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র বাহিনী হামাসের সঙ্গে লড়াই চলছে ইজ়রায়েল সেনার। আর সেই যুদ্ধের মধ্যেই আটকে হুগলির তিন গবেষক। ইজরাইলের তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করছেন সৌরভ কুমার। অ্যালঝাইমার্স রোগ নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। গত দেড় বছর ইজ়রায়েলের বাণিজ্য নগরী তেল আভিভে রয়েছেন সৌরভ। অন্য দিকে, যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণে ইজ়রায়েলের হাইফা শহরে আটকে পড়েছেন উত্তরপাড়ার গবেষক দম্পতি সোমোদয় হাজরা এবং তাঁর স্ত্রী জয়িতা দত্ত হাজরা। দম্পতির তিন বছরের কন্যাও বাবা-মায়ের সঙ্গে ইজ়রায়েলে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ইজ়রায়েলের আকাশে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠায় আতঙ্ক রয়েছেন সৌরভ-সোমোদয়দের মতো অনেক ভারতীয়।
সৌরভের বাড়ি হুগলির ধনিয়াখালির ভাণ্ডারহাটিতে। স্ত্রী অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরপাড়া প্যারিমোহন কলেজের শারীরবিদ্যার অধ্যাপক। অর্ণা নামে সাত মাসের এক মেয়ে রয়েছে দম্পতির। অনিন্দিতা জানান, সৌরভ ইজ়রায়েলে আটকে পড়ায় খুবই দুশ্চিন্তায় আছে তাঁদের পরিবার। পুজোর আগে বাড়ি ফেরার কথা ছিল সৌরভের। ১৬ তারিখ বিমানের টিকিটও কাটা আছে। কিন্তু তার মধ্যেই বেধে গিয়েছে যুদ্ধ। বাতিল করা হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার সমস্ত ফ্লাইট। বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত হয়েছে সৌরভের মতো অনেক ভারতীয়ের।
যদিও অনিন্দিতা জানিয়েছেন, ফোনে রোজ স্বামীর সঙ্গে কথা হচ্ছে তাঁর। সৌরভ তাঁকে জানিয়েছেন যে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোতে পারছেন না। যুদ্ধের সাইরেন বাজলেই নির্দিষ্ট আশ্রয় শিবিরে ঢুকে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। জল, খাবার পেতে কোনও সমস্যা না হলেও মাঝরাতে বিস্ফোরণের শব্দ ঘুম ভেঙে যাচ্ছে তাঁর। আতঙ্কে কাটছে প্রতি মুহূর্ত। দীর্ঘ দিন এই অবস্থা চললে কী হবে তা নিয়েও চিন্তা গ্রাস করেছে সৌরভদের মতো ইজ়রায়েলে আটকে পড়া ভারতীয়দের। এই প্রসঙ্গে সৌরভের শাশুড়ি শুভ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। পুজোর আগেই জামাইয়ের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। এখন এই পরিস্থিতিতে কী হবে জানি না। ভারত সরকার সৌরভ এবং ওর মতো বাকি ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।’’
অন্য দিকে, যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ছেলে, বৌমা এবং নাতনির চিন্তায় দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না সোমোদয়ের মা-বাবা। সোমোদয়ের বাবা প্রাক্তন অধ্যাপক উদয়শঙ্কর হাজরা, দু’সপ্তাহ আগেই ছেলের কাছ থেকে ফিরেছেন। তখনও সে দেশে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠেনি। কিন্তু, কয়েক দিন যেতে না যেতেই পরিস্থিতি বদলেছে।
উদয় জানিয়েছেন, হাইফা শহরে এখনও যুদ্ধের আঁচ লাগেনি। তবে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। তবে সোমোদয়ের বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রয়েছে। সেখানে গবেষণার কাজও চলছে। সোমোদয় ইজ়রায়েল থেকে ভিডিয়ো কলে জানান, সাইরেন বাজলেই তাঁদের বাঙ্কারে ঢুকে যেতে বলা হচ্ছে। ৭২ ঘণ্টার জন্য জল, খাবার এবং পোশাক মজুত করে রাখার নির্দেশও দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সোমোদয়ের মা সোমা হাজরা জানিয়েছেন, কালীপুজোর আগে বাড়ি ফেরার কথা ছিল সোমোদয়দের। ৯ নভেম্বর তাঁদের ফেরার টিকিট কাটা ছিল। তবে এখন কী হবে, তা ভেবেই দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy