Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Illegal Firecrackers Recovered

বাসের ছাদে বাজির বস্তা কী ভাবে, প্রশ্নে পুলিশের নজরদারি

সম্প্রতি দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরে রাজ্য জুড়ে বেআইনি বাজি উদ্ধারে তৎপর হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।

এই বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বাজি। —নিজস্ব চিত্র।

এই বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বাজি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪২
Share: Save:

বাসের ছাদ থেকে রাস্তায় পড়ে গিয়েছিল বড় দু’টি বস্তা। সেই দুই বস্তা থেকে বেরিয়ে এল বেআইনি বাজি! আর এই ঘটনা প্রশ্ন তুলে দিল পুলিশি নজরদারি নিয়ে। কারণ, শহরের জনবহুল বাসস্ট্যান্ডে দূরপাল্লার বাসের ছাদে বাজি ভর্তি বস্তা তোলা হলেও তা কেউ জানতে পারল না! বরং ‘নিরাপদে’ সেগুলি পাড়ি দিচ্ছিল ভিন্ রাজ্যে।

সম্প্রতি দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরে রাজ্য জুড়ে বেআইনি বাজি উদ্ধারে তৎপর হয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। কলকাতা পুলিশের কর্তাদের যদিও দাবি, ধর্মতলা ও বাবুঘাট বাসস্ট্যান্ডে দূরপাল্লার বাসে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়। এর আগে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি আটকও করা হয়েছে। নজরদারি এড়িয়ে কেউ যাতে বাজি নিয়ে যেতে না পারে, তার জন্য পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যদিও এমন ঘটনা ‘বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো’র পুরনো প্রবাদের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ‘‘নিষিদ্ধ বাজি বস্তাবন্দি হয়ে ভিন্ রাজ্যে গোপনে পাড়ি দিতে পারে। কিন্তু আমাদের শহরের পুলিশ তার খবর থাকে না!’’

শুক্রবার হাওড়ার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা সেতুর উপরে এই ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে বিহারমুখী একটি বাসের ছাদে অন্যান্য মালপত্রের সঙ্গে রাখা ছিল ওই দু’টি বস্তা। গরফা সেতুর হাইট-বারে ধাক্কা লেগে পড়ে যায় বাজিতে বোঝাই বস্তাগুলি। আচমকা সেই দৃশ্য দেখে হকচকিয়ে যান কোনা ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। সামনে যেতেই তাঁরা দেখেন, বস্তার মুখ খুলে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে নিষিদ্ধ বাজি। তড়িঘড়ি তাঁরা বাসটিকে আটক করেন। বাজেয়াপ্ত বাজি জগাছা থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। শনিবার হাওড়া সিটি পুলিশের নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘দু’হাজার কেজিরও বেশি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি ২৬টি প্যাকেটে ভরা ছিল। তিন জনকে প্রথমে আটক করা হলেও পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোথা থেকে কে বা কারা এই বাজি নিয়ে যাচ্ছিল এবং বিহারের কোথায় সরবরাহ করার কথা ছিল, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

পুলিশ জানাচ্ছে, সবই ছিল নিষিদ্ধ শব্দবাজি। বাসের চালক ও কন্ডাক্টর মিলিয়ে গ্রেফতার হওয়া তিন জনের নাম শম্ভু প্রসাদ, ফৈয়াজ আলম এবং মহম্মদ মুন্না খান। এ দিন আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের তিন দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে
রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। হাওড়ার নগরপাল এ দিন আরও জানিয়েছেন, প্রতিটি থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দূরপাল্লার বাস-সহ বিভিন্ন গাড়িতে আচমকাই তল্লাশি চালাতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কলকাতার বাবুঘাট থেকে ছেড়ে আসা ওই বাসের ছাদে বাজি-বোঝাই দু’টি বড় মাপের বস্তা তোলা হলেও তা কলকাতা পুলিশের নজরে এল না কেন?

চলতি বছরেই শেষ কয়েক মাসের মধ্যে এগরা, বজবজ এবং দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সর্বত্রই বেআইনি ভাবে রমরমিয়ে চলছিল বাজি তৈরির কারখানা। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশেই বাজি তৈরির এমন রমরমা চলছিল। না-হলে বড় বস্তার মধ্যে বাজির বস্তা বাসের ছাদে তুলে ভিন্ রাজ্যে পাঠানোর সাহস হয় কী করে? তা হলে কি বাবুঘাটে টহলদার পুলিশের কোনও নজরদারিই নেই? না কি জেনেশুনেই ভিন্ রাজ্যে বাজি পাচারের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে? প্রশ্নটা রয়েই গেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Kona Expressway police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy