পলি হাউসে চলছে গবেষণা। নিজস্ব চিত্র।
যুদ্ধে নেমেছে ইজ়রায়েল। তাতে চিন্তায় পড়েছিল হুগলি জেলার উদ্যানপালন দফতর। কারণ, ইজ়রায়েলের প্রযুক্তিতে এবং সেখানকার কৃষি বিশেষজ্ঞদের সরাসরি পরামর্শে এখানে পলিহাউস চাষের একটি প্রকল্প চলছে। যুদ্ধের কারণে পাছে প্রকল্প থমকে যায়, চিন্তা ছিল এটাই। তবে তা হয়নি। জেলা উদ্যানপালন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যুদ্ধের আঁচ এতে পড়েনি।
চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রে রয়েছে জেলা উদ্যানপালন দফতরের কার্যালয়। গবেষণাও চলে। গত বছর থেকে এখানে ‘ইন্দো-ইজ়রায়েল সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর ভেজিটেবলস’ প্রকল্পে পলিহাউসের (পোশাকি নাম, গ্রিন হাউস) মাধ্যমে অসময়ের আনাজ চাষ শুরু হয়। প্রযুক্তি ইজ়রায়েলের। প্রকল্পের খরচের ৬০ শতাংশ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি জোগাচ্ছে রাজ্য।
হুগলির ভারপ্রাপ্ত উপ-উদ্যানপালন অধিকর্তা শুভাশিস গিরি বলেন, ‘‘যুদ্ধের কোনও আঁচ এই প্রকল্পে পড়েনি। ইজ়রায়েল থেকে বিজ্ঞানীরা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখছেন।’’ পলিহাউসে বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, চেরি, টোম্যাটো, বীজহীন শসা প্রভৃতির দু’বার করে ফলন হয়ে গিয়েছে। সুফল বাংলা স্টলের মাধ্যমে তা বিক্রি করা হয়েছে বলে হুগলির সহ-উদ্যানপালন অধিকর্তা সাত্যকি মণ্ডল জানান।
সাত্যকি আরও জানান, এই পদ্ধতিতে চার দিকে প্লাস্টিক অথবা জালের ছাউনি থাকায় সূর্যের তাপ সরাসরি খেতে ঢুকতে পারে না। ফলে শীতের আনাজ গরমেও ফলানো যায়। জলের অপচয় ঠেকানো যায়। সার দেওয়া হয় নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে। প্লাস্টিকের চাদর থাকায় দুর্যোগের প্রকোপও ঠেকানো সম্ভব হয়।
ন্যাচরালি ভেন্টিলেটেড (প্রাকৃতিক বায়ু চলাচলযুক্ত), ইনসেক্ট প্রুফ নেট হাউস (পোকা প্রতিরোধক), ওয়াক ইন টানেল (এক জন ভিতরে ঢুকতে পারবেন) এবং হাইটেক (চারা তৈরি হয়) এই চার রকম পলিহাউস হয়। চুঁচুড়ায় তৈরি মোট ২১টি হাউসের মধ্যে চার ধরনই রয়েছে। ৫০০ থেকে ১০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে এগুলি করা হয়েছে। জেলার চাষিদের এখানে এই চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞেরা জানান, বাঁশ দিয়ে তৈরি তুলনামূলক কম খরচের পলিহাউস কম টেকসই। ইজ়রায়েলি পদ্ধতিতে ‘টিউবিউলার স্ট্রাকচার পলিহাউস’ তৈরি জিআই পাইপ দিয়ে, যা ১২-১৪ বছর টিকে থাকে। ৫০০ বর্গমিটারের একটি পলি হাউস তৈরিতে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। পুরো পদ্ধতি করতে পারলে রাজ্য সরকার ৫০ শতাংশ দেয়। সাত্যকির বক্তব্য, এই পদ্ধতিতে সব ধরনের চাষ হলেও খরচসাপেক্ষ হওয়ায় অসময়ের আনাজ চাষ চাষিদের পক্ষে বেশি
লাভজনক হবে।
শুভাশিস বলেন, ‘‘ইজ়রায়েলের বিশেষজ্ঞেরা প্রযুক্তির বিষয় দেখিয়ে গিয়েছেন। এখন হোয়াটসঅ্যাপে তাঁরা পরামর্শ বা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। তবে, হাতেকলমে আরও কিছু খুঁটিনাটি জিনিস দেখাতে এখনও তাঁদের আসার প্রয়োজন আছে। আশা করছি শীঘ্রই তাঁরা আসবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy