বলাগড়ে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু বছর ২৭ এর অনিমেষ দাসের । জিরাট আহমেদপুর গ্রামীন হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তার বাবা শ্যাম সুন্দর দাস ।
পুলিশের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মোটরবাইক আরোহী এক যুবকের। শনিবার সকালে হুগলির বলাগড় বাস স্ট্যান্ডের কাছে হাজরা মোড়ে অসম লিঙ্ক রোডে ওই দুর্ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ করেন মৃতের আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয়েরা। মৃতের নাম অনিমেষ দাস (২৭)। বাড়ি শ্রীপুর-বলাগড় পঞ্চায়েতের আরাজিনগর গ্রামে।
হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পরিবারের তরফে বলাগড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় মামলা রুজু করে অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ডিএসপি (ক্রাইম) দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, ‘‘পুলিশের গাড়ি দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছে। চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন মৃতের বাবা শ্যামসুন্দর দাস।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিমেষ একটি ই-কমার্স সংস্থায় সরবরাহ-কর্মীর (ডেলিভারি ম্যান) কাজ করতেন। সেই কাজেই তিনি কুন্তীঘাটে যাওয়ার পথে সকাল ১০টা নাগাদ ওই দুর্ঘটনা।
অনিমেষের আত্মীয়দের বক্তব্য, প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে তাঁরা শুনেছেন, বলাগড় থানার একটি গাড়ি সোমরা বাজারের দিক থেকে আনাজবোঝাই একটি গাড়িকে ধাওয়া করছিল। পুলিশের সেই গাড়িটিই অনিমেষকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। অনিমেষ পড়ে গেলে গাড়ির চাকা তাঁর মাথা পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
আনাজের গাড়িকে ধাওয়া করার বিষয়টি উড়িয়ে দুর্ঘটনার ব্যাখ্যায় পুলিশের দাবি, হাজরা মোড়ে একটি গাড়ি দাঁড়িয়েছিল। তার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একটি সাইকেলের হাতলে ব্যাগ আটকে অনিমেষ রাস্তায় পড়ে যান। তখনই দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটিকে পাশ কাটিয়ে চলার সময় পুলিশের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হন যুবক।
থানা থেকে পুলিশ এসে যুবকের দেহ জিরাট আহমেদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠান। পরে ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে এলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন মৃতের আত্মীয় এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ দেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরে সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ অবরোধ শুরু হয়। বিক্ষোভের মধ্যে অভিযোগ ওঠে, টহল দেওয়ার নামে ওই সড়কে গাড়ি থেকে পুলিশ অবৈধ ভাবে টাকা তোলে। অবরোধের জেরে যানজট হয়। পুলিশ দুর্ঘটনার সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিমেষ বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তাঁর আয়েই সংসার চলছিল। শ্যামসুন্দর জানান, এ দিন ছেলে সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ কাজে বেরিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এখন আমাদের কে দেখবে? শুনলাম, আনাজের গাড়িকে তাড়া করার সময়ে পিছন থেকে ছেলের মাথা পিষে দিয়েছে পুলিশের গাড়ি।’’ স্থানীয় এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘অসম লিঙ্ক রোডের নানা জায়গায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে টাকা তোলে পুলিশ। এ জিনিস বন্ধ হোক। আর, দুর্ঘটনার দায় পুলিশকেই নিতে হবে।’’ টাকা তোলার অভিযোগ পুলিশ মানেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy