নিহত জ্যোৎস্না জানার (ইনসেটে) মৃত্যুর তদন্তে পুলিশের কুকুর (উপরে)। পোলবা থানার সামনে বিজেপির বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ।
হুগলির পোলবায় সোমবার রাতে গলার নলিকাটা অবস্থায় ইটভাটা শ্রমিক এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। নিহত জ্যোৎস্না জানার বড় ছেলে রাজকুমার বিজেপি কর্মী। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে পথে নেমেছেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সোমবার রাতে তিনি পোলবা থানায় গিয়ে ঘণ্টাখানেক পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মঙ্গলবার পথ অবরোধে নেতৃত্ব দেন।
পুলিশের দাবি, গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে। মঙ্গলবার পুলিশ কুকুর আনা হয়। ঘটনাস্থলে এসে হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কল্যাণ সরকার জানান, ঘটনাস্থলের পাশে পশুখাদ্যের একটি কারখানা আছে। সেখান থেকে কয়েক জনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। খুনের কারণ নিয়ে পুলিশকর্তার বক্তব্য, একাধিক সন্দেহজনক বিষয় রয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে জায়গা থেকে দেহ উদ্ধার হয়, পুলিশ কুকুরকে প্রথমে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সে দৌড়ে পশুখাদ্য তৈরির ওই কারখানায় ঢুকে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘ দিন ধরে স্বামী পূর্ণচন্দ্রের সঙ্গে সুগন্ধার কাছে দিল্লি রোডের পাশে একটি ইটভাটায় কাজ করতেন জ্যোৎস্না। সেখানেই থাকতেন। দুই ছেলে রাজকুমার ও রবি অন্ধ্রপ্রদেশে সোনার কাজ করেন। সুগন্ধার জগন্নাথবাটীতে পরিবারের দোতলা বাড়িতে রাজকুমারের স্ত্রী পারমিতা থাকেন। তিনি জানান, রবিবার রাতে শেষ বার এসেছিলেন শাশুড়ি। সোমবার বিকেলে পারমিতা খবর পান, ছাগল চরাতে গিয়ে শাশুড়ি নিখোঁজ। রাত ৯টা নাগাদ ইটভাটার পাশে পরিত্যক্ত কারখানার চৌবাচ্চায় দেহ মেলে জ্যোৎস্নার। পরনের শাড়ি ছিল অবিন্যস্ত।
পুলিশ খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে যান বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ। রাত ১২টা নাগাদ থানায় আসেন লকেট। দলের রাজ্য নেতা দীপাঞ্জন গুহও ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জ্যোৎস্নার স্বামীকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভোরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পারমিতা। তার ভিত্তিতে খুন, প্রমাণ লোপের চেষ্টার অভিযোগে মামলা রুজু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে জ্যোৎস্নাকে কাছেই কোথাও খুন করা হয়। তার পরে দেহ টেনে নিয়ে গিয়ে ওই চৌবাচ্চায় ফেলে লতাপাতা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ থানার সামনে চুঁচুড়া-পান্ডুয়া ৩৯ নম্বর রুটে ঝাঁটা হাতে বসে পড়েন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। লকেট পৌঁছন। ঘণ্টাখানেক পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। লকেট বলেন, ‘‘বাংলায় মহিলারা সুরক্ষিত নয়। ধর্ষণ, খুন লেগেই রয়েছে।’’ জ্যোৎস্নাকে খুনের ঘটনায় রাজনীতি থাকতে পারে বলে তাঁর অনুমান। মঙ্গলবার সকালেই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ফিরেছেন রাজকুমার ও রবি। তাঁদের বক্তব্য, মায়ের কোনও শত্রু ছিল কি না, তাঁরা জানেন না।
লকেটের মন্তব্য নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলায় মহিলারা কতটা বেশি সুরক্ষিত, কেন্দ্রের রিপোর্টেই তা স্পষ্ট।’’ পোলবার ঘটনা নিয়ে অসিতের বক্তব্য, ‘‘পুলিশকে তদন্তের সময় দিতে হবে।’’ লকেট আন্দোলন করে তদন্তে বাধা দিয়েছেন বলে বিধায়কের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy