Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Child Abduction

শিশুকন্যাকে মায়ের থেকে ‘ছিনতাই করে বিক্রি’, হাওড়ার বালিতে গ্রেফতার সাত

শিশু বিক্রির নেপথ্যে কোনও চক্র কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ দিন ধৃতদের হাওড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। 

representative image of an arrested person

শিশু বিক্রির অভিযোগে দুই মহিলা-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ০৮:০৬
Share: Save:

একটি শিশুকে জোর করে কেড়ে নিয়ে অন্যের কাছে বিক্রির অভিযোগে দুই মহিলা-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পাশাপাশি, ধৃতদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার অভিযোগও এনেছেন তরুণী মা। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বালিতে। শিশু বিক্রির নেপথ্যে কোনও চক্র কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ দিন ধৃতদের হাওড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশি সূত্রের খবর, বছর উনিশের এক তরুণী বেলুড়ের বাসিন্দা গিরিরাজ খৈতান নামে এক ব্যক্তির কাছে সেলাইয়ের কাজ করতেন। সেখানেই ওই ব্যক্তির পরিচিত, অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী শঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। অভিযোগ, শঙ্কর ওই তরুণীকে তাঁর দেখাশোনা করার দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করেন। এমনকি, গিরিরাজও তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। বিবাহিতা ওই তরুণী তার আগে থেকেই অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। প্রসবের জন্য তাঁকে সালকিয়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেন ওই দুই ব্যক্তি। সেখানেই গত ১৭ এপ্রিল মেয়ে হয় ওই তরুণীর।

অভিযোগ, তখন থেকেই গিরিরাজ ও শঙ্কর ওই তরুণীকে চাপ দিতে থাকেন, শিশুটিকে লেক টাউনের বাসিন্দা স্বাতী ও বিষ্ণু শর্মার কাছে বিক্রির জন্য। কিন্তু তাতে তিনি রাজি হননি বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছেন ওই তরুণী। তাঁর আরও অভিযোগ, ক্রমাগত চাপ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে শুরু করেন গিরিরাজ, শঙ্কর এবং লেক টাউনের ওই দম্পতি ও তাঁদের এক আত্মীয় মণীশ শর্মা। শেষে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। অভিযোগ, গত ৯ মে মাসির বাড়ি যাওয়ার জন্য ধর্মতলায় পৌঁছন তরুণী। সেখানেই তাঁকে পাকড়াও করেন অভিযুক্তেরা। অভিযোগ, তরুণীকে রীতিমতো মারধর করে শিশুটিকে কেড়ে নিয়ে চম্পট দেন স্বাতী ও বিষ্ণু। তরুণী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, মেয়েকে ফেরত না পেলে তিনি পুলিশের কাছে যাবেন বলায় শঙ্কর তাঁকে হুমকি দেন। তাঁকে বলা হয়, স্ট্যাম্প পেপারে সই করে ওই তরুণী নিজেই মেয়েকে বিক্রি করেছেন। তাই আর কিছু করতে পারবেন না।

পুলিশকে তরুণী জানিয়েছেন, প্যান কার্ড করিয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁকে দিয়ে স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়েছিলেন গিরিরাজ। প্রথমে ভয়ে চুপ থাকলেও গত ২৪ মে বালি থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানান ওই তরুণী। তার পরেই শঙ্কর ও গিরিরাজকে পাকড়াও করে বালি থানার পুলিশ। তাঁদের জেরা করার পরে স্বাতী, বিষ্ণু ও তাঁদের আত্মীয় মণীশকে দক্ষিণদাঁড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় তাঁরা স্বীকার করেন যে, শিশুটিকে সালকিয়ার এক দম্পতির কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এর পরে বালি থানার কাছ থেকে বিষয়টি জেনে মালিপাঁচঘরা থানার পুলিশ সালকিয়ার বাসিন্দা রাজেশ গুপ্ত ও শতাব্দী গুপ্তকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় মাস দেড়েকের শিশুটি। রাজেশ ও শতাব্দীর আর একটি সন্তান রয়েছে।

এ দিন হাওড়া সিটি পুলিশের উপ নগরপাল (উত্তর) অনুপম সিংহ বলেন, “শিশু বিক্রির নেপথ্যে টাকার লেনদেনের বিষয়টিও জানা গিয়েছে। তবে, সেই অঙ্কটা কত, কী ভাবে লেনদেন হয়েছিল, সবই তদন্তে দেখা হচ্ছে। শিশু বিক্রির নেপথ্যে বড় কোনও চক্র রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Howrah Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy