চলছে লিফলেট বিলি। নিজস্ব চিত্র।
সামনেই কালীপুজো। ছটও। হুগলি জেলায় বাজির বড় বাজার এখনও সে ভাবে চোখে না পড়লেও বাজি বিক্রি থেমে নেই। কোথাও কোথাও মুদিখানার সামগ্রী বা প্রসাধনী বিক্রির আড়ালে বাজি কেনাবেচা চলছে বলে অভিযোগ। কালীপুজো যত এগিয়ে আসছে, বাজির দৌরাত্ম্য নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। বাজির শব্দমাত্রা বৃদ্ধির নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার ডানকুনিতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হুগলি আঞ্চলিক কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিল বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চ। লিফলেট বিলি করা হয় ওই কার্যালয়ের সামনে।
অনেকেরই বক্তব্য, এমনিতেই সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে কালীপুজো, ছটপুজোর মরসুমে লাগামহীন বাজি ফাটে। আশ্বাস দিয়েও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বা প্রশাসন তা আটকাতে পারে না অথবা তাদের সেই ‘সদিচ্ছা’ থাকে না। তার উপরে এ বার ৯০ ডেসিবেল থেকে বাড়িয়ে বাজির সর্বোচ্চ শব্দমাত্রা ১২৫ ডেসিবেল করেছে পর্ষদ। ফলে ‘শব্দদৈত্য’কে আদৌ বোতলবন্দি করা যাবে কি না, তাঁরা সন্দিহান।
বেগমপুর, ডানকুনির কালীপুরে কালীপুজোর আগে বাজির বাজার বসে। অভিযোগ, প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হয়। শুক্রবার পর্যন্ত সেই বাজার না-বসলেও দুই জায়গাতেই বাজির বিক্রিবাট্টা চলছে বলে জানা গিয়েছে। আরামবাগ মহকুমায় নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চলছে। গত পনেরো দিনে পুলিশ গোঘাট, খানাকুলের নতিবপুরে থেকে নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছে।
অভিযোগ, বলাগড় ব্লকের গুপ্তিপাড়া রথ সড়ক, ইনছুড়া বাজার, কুন্তীঘাটের নিত্যানন্দপুর বাজার, লক্ষ্মীবাজার প্রভৃতি জায়গায় মুদিখানা, প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রির দোকানের আড়ালে শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে। ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা ‘নিরি’-র ছাড়পত্র ছাড়াই বাজি বিকোচ্ছে। তবে, অচেনা মানুষকে দেওয়া হচ্ছে না। পান্ডুয়ার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘গ্রামে শব্দবাজির দাপট রয়েছে। কোথা থেকে তা আসে, জানি না।’’ তবে এখানে প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে না।
বাজি ও ডিজে বক্স বিরোধী মঞ্চের সভাপতি সুরজিৎ সেন, সাধারণ সম্পাদক গৌতম সরকারের বক্তব্য, দূষণের কারণে দিল্লিতে বাজি নিষিদ্ধ হয়েছে। এ রাজ্যের সরকারও সমস্ত ধরনের বাজি নিষিদ্ধ করুক। আন্দোলনকারীদের পক্ষে শুভ্রজিৎ সামন্ত, মাবুদ আলি, ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়রা মনে করেন, জীবিকার দোহাই দিয়ে বাজির পক্ষে যাঁরা সওয়াল করছেন, তাঁরা পরিবেশ তথা মানুষের ক্ষতি করছেন। বছরে কয়েক ঘণ্টা শুধু ‘সবুজ বাজি’ পোড়ানোর সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ অমান্য করে হুগলির নানা জায়গায় যখন খুশি বাজি ফাটে। পুলিশ-প্রশাসন, পর্ষদ ব্যবস্থা নেয় না।
বৃহস্পতিবার রাতে দক্ষিণ চন্দননগরে বাজি ফেটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ডানকুনি থানার তরফে বাজি ব্যবসায়ীদের নিয়ে সচেতনতা প্রচার করা হয়। ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে, পুলিশের চিহ্নিত নির্দিষ্ট স্থানে সরকারি নির্দেশ মেনে বাজি বিক্রি করতে হবে।
তথাকথিত ‘সবুজ বাজি’র দেখা বাজারে কতটা মিলবে, তা নিয়ে সন্দিহান ব্যবসায়ীদের একাংশই। চুঁচুড়ার কামারপাড়ার বাজি ব্যবসায়ী দেবাশিস যশের দাবি, তিনি শব্দবাজি বিক্রি করেন না। এ বছর অন্য রাজ্য থেকে শুধুমাত্র ‘সবুজ বাজি’ এনেছেন। এ রাজ্যে চাহিদা মতো ‘সবুজ বাজি’ মিলছে না।
এই পরিস্থিতিতে নিষিদ্ধ বাজিই ফের বাজার ছেয়ে ফেলবে কি না,
প্রশ্ন উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy