Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Arambagh

Arambagh: আগামী বছর ভোট, কাজ নেই পঞ্চায়েতে

জেলার পঞ্চায়েতগুলির কাজকর্ম যে স্থবির হয়ে গিয়েছে মানছেন বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

শংসাপত্র লিখছেন ভাদুর পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তিনাথ রায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

শংসাপত্র লিখছেন ভাদুর পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তিনাথ রায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২২ ০৬:৫০
Share: Save:

আগামী বছর ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। অন্যান্য বার ভোটের আগে এমন সময়ে গ্রামোন্নয়নের কাজে পঞ্চায়েতের সদস্য-কর্মীদের দম ফেলার ফুরসত থাকে না। অথচ, এ বার ছবিটা উল্টো। হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েতই কার্যত স্থবির। পঞ্চায়েতে সবচেয়ে জনপ্রিয় কেন্দ্রীয় প্রকল্প ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। বন্ধ আরও দুই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ— প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা।

ওই তিন প্রকল্পেই সবচেয়ে বেশি কাজ হয়। তা তো হচ্ছেই না, বেশির ভাগ পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলও বিশেষ নেই। ফলে, কাজ থমকে। অনেক প্রধানেরই দাবি, রাজ্যের থেকে বিশেষ টাকা পাওয়া যায় না। ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প চালাতে গিয়ে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলও প্রায় শেষ। কিছু পঞ্চায়েতে শুধু কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের কিছু টাকা পড়ে রয়েছে। তাই প্রধান-উপপ্রধানরা এখন পঞ্চায়েতে বসে কার্যত মাছি তাড়াচ্ছেন। কেউ শুধু শংসাপত্র বিলি করছেন বা টুকটাক কাজ করছেন।

গোঘাট-১ ব্লকের ভাদুর পঞ্চায়েতে সদস্যসংখ্যা ১৪। প্রধান শান্তিনাথ রায় নিয়মিত পঞ্চায়েতে আসছেন। বাকিদের অনেকেই ‘বুড়িছোঁয়া’ করে চলে যাচ্ছেন। প্রধান বলেন, ‘‘শংসাপত্র দেওয়া ছাড়া সব কাজই প্রায় বন্ধ। সেই শংসাপত্র পেতে যাতে কারও অসুবিধা না হয়, সে জন্য সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিসে বসে গল্পগুজব করে চলে যাই।”

বলাগড়ের বাকুলিয়া ধোবাপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান মধুমিতা সমাদ্দারের খেদ, ‘‘১০০ দিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি। ওই প্রকল্পে এই সময়ে নিকাশি নালা তৈরি বা পরিষ্কার, খারাপ রাস্তার গর্ত বোঝানো ইত্যাদি গ্রামোন্নয়নের কাজ খুব জরুরি। সে সব করা যাচ্ছে না। এলাকায় ক্ষোভ থাকছে।’’

কামারপুকুর পঞ্চায়েত প্রধান তপন মণ্ডলের টেবিলে আবার কাগজপত্রের পাহাড় জমেছে। এত কাজ?

প্রধান বলেন, “উল্টো। এখন পাড়ার কলতলার ঝগড়াও অভিযোগ আকারে চলে আসছে। সেই ঠেলা সামলাচ্ছি। গত মঙ্গলবার দশঘরা গ্রাম থেকে একটি অভিযোগপত্র আসে। বিষয় ব্যক্তি-মালিকানার তালগাছ থেকে সরকারি রাস্তায় যখন তখন তাল পড়ছে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা। বুঝুন, কী কাজ!’’

একই রকম কর্মহীনতার কথা মানছেন আরামবাগের মায়াপুর-২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আলোক সাঁতরা, খানাকুল-১ ব্লকের ঘোষপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলি প্রমুখ। প্রধানদের অভিযোগ, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে কিছু পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজের কথা বলা হলেও বালির সঙ্কটে সবই প্রায় বন্ধ আছে। বর্ষার তিন মাস বৈধ বালি খাদগুলি বন্ধ থাকায় বাজারে বালির দাম চড়া। ইট, স্টোনচিপসের দামও দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কাজ করা যাচ্ছে না।

জেলার পঞ্চায়েতগুলির কাজকর্ম যে স্থবির হয়ে গিয়েছে মানছেন বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। জেলা পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “পঞ্চায়েতগুলিকে সক্রিয় করতে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে পড়ে থাকা চতুর্দশ অর্থ কমিশন তহবিলের ১০০ শতাংশ খরচ করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের আনটায়েড বা নিঃশর্ত তহবিলের অন্তত ৫০ শতাংশ রাস্তা তৈরির কাজে শেষ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৬০ শতাংশ খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে নিকাশি এবং পানীয় জলের ব্যবস্থায়। বাকি নিঃশর্ত তহবিলে রাস্তা, আলো, পুকুরঘাট, শ্মশানের শেড ইত্যাদি পরিকাঠামো তৈরি করা যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Arambagh Hooghly Panchayat Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy