কাটা গাছ পড়ে রয়েছে। গোঘাটের বদনগঞ্জে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
চুক্তিপত্র গোপন করে পঞ্চায়েতের লাগানো গাছ কেটে বিক্রির টাকা আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠল গোঘাট-২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত বদনগঞ্জ-ফুলুই ১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে ওই পঞ্চায়েতের সচিবের বিরুদ্ধেও অনিয়মে যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন প্রধান লক্ষ্মী মালিক। তিনি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে পঞ্চায়েত সমিতির দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ উড়িয়ে উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষালের দাবি, তাঁকে ফাঁসানোরচেষ্টা হচ্ছে।
পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ স্বপন সাহানা বলেন, “আমার তরফে বিষয়টা সোমবার বিডিও এবং জেলা প্রশাসনকে জানাব। চুক্তিপত্র গোপন করা নিয়ে কারও দোষ ধরা পড়লে শাস্তিরও দাবি করব।”
পঞ্চায়েত ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার ভুতগেড়ে নামে একটি পুকুরের পাড় থেকে মোট ২৯০টি গাছ কাটার অনুমতি পেতে গত ২৫ মে পুকুর-মালিকরা বন দফতরে আবেদন করেন। বন দফতর অনুমোদন দেয়। গত বৃহস্পতিবার প্রধানের কাছে স্থানীয় ভাবে গাছ কাটার ছাড়পত্র নিতে উন্নয়ন খাতে ১৫০০ টাকা জমা দিয়ে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
প্রথম থেকে গ্রামবাসীর একাংশের দাবি ছিল, ওখানকার গাছ কাটার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের সঙ্গে বাম আমলে চুক্তি হয়েছিল। সেইমতো গাছ কাটতে হবে। তা নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে গ্রামবাসীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। শেষমেশ বিকেল ৪টের পরে চুক্তিপত্র খুঁজে বের করা হয়। ২০০৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে করা সেই চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে— গাছের চারা কিনে লাগানো, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচর্চা— সবই করবে পঞ্চায়েত। গাছ পরিণত হওয়ার পরে কেটে বিক্রির পরে মোট টাকার ৬৫ শতাংশ পঞ্চায়েত নেবে, বাকি ৩৫ শতাংশ পাবেন পুকুর-মালিকরা। চুক্তিপত্রে প্রথম পক্ষ হিসেবে তৎকালীন সিপিএম প্রধান অশোক সাঁতরার সই রয়েছে। পুকুর-মালিকদের পক্ষে ১৮ জনের সই রয়েছে। তার মধ্যে সাত নম্বরে সই রয়েছে বর্তমান উপপ্রধান প্রসেনজিতের।
প্রধানের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তিপত্র নেই জানিয়েআমার কাছে ২৯০টি গাছ কাটার ছাড়পত্রে সই করিয়ে নিয়েছেন পঞ্চায়েত সচিব অশোক সামন্ত। উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষালের যোগসাজশেই এটা হয়েছে। শুক্রবার জানতে পারি, ওইসব গাছ কাটার ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তিপত্র আছে। তা মানা হয়নি।”
প্রধান আরও জানান, চুক্তি অনুযায়ী পুকুর-মালিকদের কাছ থেকে পঞ্চায়েতের প্রাপ্য মোট গাছ বিক্রির ৬৫ শতাংশ টাকা (প্রায় ২ লক্ষ) আদায় করা হবে।
উপপ্রধানের দাবি, “ঘটনার সঙ্গে আমাকে মিথ্যা জড়ানো হচ্ছে। চুক্তিপত্র নিয়ে আমার সঙ্গে প্রধান কোনও আলোচনাই করেননি। সচিবকেও আমি প্রভাবিত করিনি।’’ একইসঙ্গে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘প্রধানই বাড়িতে বসে প্রশাসন চালাতে গিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যদের অন্ধকারে রেখে দুর্নীতি করছেন। কয়েকদিন আগে প্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলাম। তারই জেরে তাঁরা ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।” পঞ্চায়েতের সচিব অশোক সামন্ত বলেন, “চুক্তিপত্রটি পুরনো ফাইলের এক পাশে থেকে গিয়েছিল, আগে দেখতে পাইনি। শুক্রবার বিকেলে পেয়েই প্রধানকে জানিয়েছি।’’ দুর্নীতির অভিযোগ মানেননি প্রধান এবংবন কর্মাধ্যক্ষ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy