১০০ দিনের কাজের বকেয়া মেটাতে তৃণমূলের তরফে সহায়তা কেন্দ্র গোঘাট ও পিয়ারাপুরে। নিজস্ব চিত্র ।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া রাজ্যই মেটাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো হুগলিতে প্রথম পর্যায়ের যাচাইয়ের কাজ সেরে ফেলেছে প্রশাসন। কার কত মজুরি বকেয়া, সেই তালিকা তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ওই প্রক্রিয়ার জন্য শ্রমিকদের আবেদনপত্র জমা নিতে রবিবার থেকে সহায়তা শিবির খুলল তৃণমূল। প্রশাসন যেখানে ‘তৈরি’, সেখানে তৃণমূলের শিবির কেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রমিকেরা অন্ধকারে। শিবিরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। দুর্নীতির গন্ধও তাঁরা পাচ্ছেন। অভিযোগ উড়িয়ে শাসকদলের ব্যাখ্যা, সরকারি কাজ হলেও দলীয় ভাবে সহযোগিতা করা যেতেই পারে। আগামী রবিবার পর্যন্ত তারা এই শিবির চালাবে।
জেলাশাসক মুক্তা আর্য জানান, ১০০ দিনের কাজে যাঁদের টাকা বকেয়া, তাঁদের তালিকা প্রশাসন তৈরি করেছে। কোনও রাজনৈতিক দলের শিবিরের সঙ্গে প্রশাসনিক কাজের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘‘কোন দল কী করছে, সেটা তাদের ব্যাপার। সরকার টাকা দেবে, প্রশাসন প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ফেলেছে।’’ হুগলিতে এই প্রকল্পে ২ লক্ষ ৭০ হাজার শ্রমিকের মজুরি বকেয়া বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
কী পরিকল্পনা তৃণমূলের?
দলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন জানান, শিবিরে নথি সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হবে।
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক বিমান ঘোষের মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতির সুযোগ তৈরির পাশাপাশি ভোটের আগে নাটক চলছে।’’ দলের অপর রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহ বলেন, ‘‘হিসেব না-দেওয়ায় কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে। রাজ্য আগে দিল না কেন? এখন ভোট কিনতে চাইছে। তাই দলীয় শিবির।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মজুরি দেওয়ার নামে ফের আমপানের মতোই দুর্নীতি হবে, এটা স্পষ্ট। সরকারি কর্মীদের বেগার খাটানো হচ্ছে, আসলে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করতেই এই ব্যবস্থা।’’ অভিষেকের কাছে নথি পাঠানো নিয়েও বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন।
এ ব্যাপারে তৃণমূলের অরিন্দমের বক্তব্য, ‘‘টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি। ওদের প্রশ্ন করাই অনৈতিক। কত মানুষ টাকা পাচ্ছেন, তার হিসেব দলও রাখতে পারে।’’
গত শুক্রবার দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে এই শিবির করার নির্দেশ দেন অভিষেক। অরিন্দম জানান, প্রত্যেক পঞ্চায়েতে শিবির হবে। এ দিন বিভিন্ন শিবিরে অনেকেই জবকার্ড এনে নাম লেখান। তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় বলেন, ‘‘মজুরির দাবি নিয়ে মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্যই সহায়তা কেন্দ্র। আমি খানাকুলের দু’টি ব্লক ও আরামবাগের পঞ্চায়েতগুলিতে ঘুরেছি। মানুষজন আসছেন। প্রয়োজনীয় নথি এন্ট্রি (অন্তর্ভুক্ত) করাচ্ছেন।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের উদ্যোগেও রবিবার জেলা জুড়ে শিবির হল। প্রত্যেক পঞ্চায়েতে একটি করে শিবির হয়। গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পে জবকার্ডধারীদের বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেবে। প্রশাসন প্রাপকদের তালিকা তৈরি করছে। এই অবস্থায়
যদি কারও কোনও দাবি থাকে সেই তথ্য আমরা দলের তরফে সংগ্রহ করছি। তা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy