অসচেতন: কোভিড বিধি উড়িয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দেখতে টিভির সামনে ভিড়। রবিবার সন্ধ্যায় হুগলির কামারপুকুরের লাহাবাজারে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
ফের করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তো কী! হুগলিতে এক শ্রেণির মানুষের সমবেত হুজুগে মাতার প্রবণতা অব্যাহত।
রবিবার, একই দিনে, জেলার তিন গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় (কন্টেনমেন্ট জ়োন) ধরা পড়ল সেই সমবেত আমোদের ছবি। যা দেখে শিউরে উঠছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। প্রশ্ন তুলছেন, আর কবে মানুষ সচেতন হবেন?
দৃশ্য ১: ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে রবিবার দুপুরে ব্যান্ডেলের গোপীনাথপুরে কোভিড-বিধি উপেক্ষা করেই দেশের জয়ের জন্য হোম-যজ্ঞ আয়োজন করলেন স্থানীয়রা।
দৃশ্য ২: পান্ডুয়ার খন্যানের নৌকাঘাট-ভগবতীডাঙার মাঠে ফুটবল প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল। ভিড়ে ঠাসা মাঠ। প্রথম ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য পুলিশ গিয়ে বন্ধ করে। আয়োজক ক্লাবের সম্পাদক দুখু মুর্মু বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম অল্প দর্শক নিয়ে খেলা চালাব। কিন্তু পুলিশ বন্ধ করে দিল। আমরা দলগুলোকে জানিয়েছি, সরকার অনুমতি দিলে আবার খেলা হবে।’’
দৃশ্য ৩: শনিবারই চুঁচুড়ার কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েত এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ করেছে প্রশাসন। অথচ, সেখানে শাসক দলের একটি ফেসবুক গ্রুপের উদ্যোগে রবিবার দুপুরে স্থানীয় লজে ‘বিজয়া সম্মিলনী’ কী করে আয়োজন করা হয়, সে প্রশ্নও উঠেছে। চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার অবশ্য সেখানে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ
করে দেন।
পুলিশ প্রশাসন ফের সক্রিয় হয়েছে। রাস্তাঘাটে মাস্কহীন ভাবে ঘুরলে ধরপাকড়ও হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে সংক্রমণ কতটা রোখা যাবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের বাড়বাড়ন্ত দেখেও এক শ্রেণির মানুষের শিক্ষা হয়নি। হাসপাতালে শয্যার অভাব, অক্সিজেন সঙ্কট, মৃত্যু— এ সব দেখার পরেও তাঁদের টনক নড়ছে না।
দুর্গাপুজোয় লাগামছাড়া ভিড় দেখে চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা আশঙ্কা করেছিলেন, করোনা সংক্রমণ ফের উর্ধ্বমুখী হবে। সেটাই হচ্ছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শনিবার হুগলির বেশিরভাগ পুর এলাকা এবং ১২টি ব্লকের বহু জায়গাকে গণ্ডিবদ্ধ করে প্রশাসন। রবিবার থেকে সচেতনতা প্রচারেও জোর বেড়েছে। কিন্তু এখনও উৎসবের মরসুম শেষ হয়নি। কালীপুজো, ছটপুজো, কার্তিক পুজো এবং জগদ্ধাত্রী পুজো বাকি। ফলে, সেই দিনগুলিতে কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। চিকিৎসকেরা ফের জানিয়েছেন, উৎসবে জনজোয়ারে রাশ টানতে না পারলে ফের পরিস্থিতি বেলাগাম হবে।
জগদ্ধাত্রীর শহর চন্দননগরে ১৫টি ওয়ার্ডকে গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছে। পুজোর চারটি দিনের জনস্রোত কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। জেলাসদর চুঁচুড়ার ৩, ৪, ৬, ১৬, ১৭ এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডও গণ্ডিবদ্ধ হয়েছে। উত্তরপাড়ার ৭টি ওয়ার্ড গণ্ডিবদ্ধ। রবিবার সকালে পুরপ্রশাসক দিলীপ যাদব পরিস্থিতি আঁচ করে নিজে মাইক নিয়ে রাস্তায় নামেন। শ্রীরামপুরের ৭টি ওয়ার্ডও গণ্ডিবদ্ধ।
এত কড়াকড়ির পরেও রবিবারের বাজারে চেনা ভিড় দেখা গিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। কোথায় মাস্ক! আর কোথায়ই বা দূরত্ব-বিধি! বৈদ্যবাটীর ১৬ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার নাগরিক সংগঠন ‘সিটিজেন্স ফোরাম’-এর পক্ষে শৈলেন পর্বতের অভিযোগ, ‘‘শাসক দলই বিধিনিষেধ তুলে এই পরিস্থিতি ডেকে আনল।’’ শাসক দল
অভিযোগ মানেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy