আয়োজন: মহিষরেখায় দামোদরের ধারে চড়ুইভাতি। ফাইল ছবি
শীত পড়ছে। এখনও সে ভাবে না জমলেও গ্রামীণ হাওড়ার নানা প্রান্তে ছুটির দিনগুলিতে পিকনিকের আসর বসছে। কখনও তা দেখা যাচ্ছে উলুবেড়িয়ায় মহিষরেখায় দামোদরের ধারে, কখনও শ্যামপুরের গড়চুমুকে হুগলি নদীর ধারে, কখনওবা কোলাঘাটে রূপনারায়ণের তীরে। এ সব জায়গায় প্লাস্টিক-থার্মোকল রুখতে এ বার পরিবেশবান্ধব চড়ুইভাতি-প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে উলুবেড়িয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যা প্রশংসা কুড়িয়েছে পরিবেশপ্রেমীদের।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রের খবর, প্রতিযোগিতায় যাঁরা অংশ নিতে চান, তাঁদের পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব সামগ্রী নিয়ে চড়ুইভাতি করতে হবে। প্লাস্টিক-থার্মোকলের থালাবাটি ব্যবহার করা যাবে না। গাছের নীচে উনুনু জ্বালানো যাবে না। ডিজে বাজানো যাবে না। প্রতিযোগিতায় শামিল হতে হলে পিকনিকের দলকে ১০টি ছবি পাঠাতে হবে। যাতে পরিবেশবান্ধব চড়ুইভাতির ব্যাপারটি বোঝা যায়। আগামী এপ্রিল মাসে প্রতিযোগিতার ফল ঘোষণা করা হবে। সেরাদের দেওয়া হবে মানপত্র ও নগদ পুরস্কার।
সংস্থার কর্ণধার জয়িতা কুন্ডু কুঁতি জানান, সমাজমাধ্যমে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে প্রচার চলছে। এখনও সে ভাবে চড়ুইভাতি শুরু হয়নি। হলে প্রতিযোগিতায় অনেকে যোগ দেবেন বলে তাঁর আশা। একইসঙ্গে চড়ুইভাতির সময়ে তাঁরা প্লাস্টিক-থার্মোকলের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালবেন বলেও জানান জয়িতা।
প্রতিযোগিতা নতুন হলেও চড়ুইভাতির সময়ে প্লাস্টিক-থার্মোকলের ব্যবহার রুখতে জয়িতাদের প্রচার নতুন নয়। আরও কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও প্রচার চালায়। নদীর ধারে খোলা জায়গায় চড়ুইভাতি করার সময় অনেকেই নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া প্লাস্টিক ও থার্মোকলের থালাবাটি ব্যবহার করেন। সেগুলি নদীতে ফেলে দেন। তার ফলে এলাকা নোংরা হয়, নদীদূষণ হয়। হাওড়া জেলা প্রশাসনও গত কয়েক বছর ধরে প্লাস্টিক-থার্মোকল নিয়ে চড়ুইভাতি করতে আসার ব্যাপারে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও চড়ুইভাতির সময়ে প্লাস্টিক-থার্মোকলের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। সেই ফাঁক পূরণ করতেই এ বার তারা প্রতিযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফেজানানো হয়।
উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশকর্মী নব দত্ত ও বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। নব বলেন, ‘‘এই ধরনের উদ্যোগ আগে কেউ নিয়েছেন বলে শুনিনি। প্রশাসন কড়া হলেও পরিবেশ দূষণ তখনই বন্ধ করা যায়, যখন মানুষ নিজে থেকে সচেতন হন। এই উদ্যোগের ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।’’ বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘সরকারেরই এ ভাবে উদ্যোগী হওয়ার দরকার ছিল। রাজ্যে কত বিষয়ে মেলা হয়। অথচ, সরকার পরিবেশ মেলা করার কথা ভাবে না। পরিবেশ নিয়ে প্রতিযোগিতা করে না। তাতে মানুষের সচেতনতা বাড়ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy