—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের টাকা বেহাত হওয়া নিয়ে শোরগোল রাজ্যের নানা জেলায়। সেই তালিকায় জুড়ল হুগলিও। গ্রামীণ হুগলির বহু ছাত্রছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢুকে অন্যত্র চলে গিয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হতেই জেলার শিক্ষা মহলে আলোড়ন পড়ে।
পুলিশ জানায়, সিঙ্গুর, চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া, হরিপাল, তারকেশ্বর, দাদপুর ব্লকের বেশ কিছু স্কুল থেকে অভিযোগ এসেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকেনি বলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জানা গিয়েছে। তদন্তে দেখা গিয়েছে ওই ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশের টাকা উত্তর দিনাজপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক মারফত অন্য অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। তবে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কোথা থেকে ‘হ্যাক’ হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে জানাতে চায়নি পুলিশ।
সিঙ্গুর ব্লকের নসিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যদেব দে বলেন, ‘‘আমাদের ৫ জন পড়ুয়ার টাকা ঢোকেনি। ওদের এ কথা জেনেই আমরা পোর্টালে দেখি, ওদের তথ্য হ্যাক হয়েছে। তাদের অ্যাক্যাউন্টের তথ্য পাল্টানো হয়েছে। সিঙ্গুর থানায় অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি শিক্ষা দফতরের সংশ্লিষ্ট সমস্ত জায়গায় জানিয়েছি।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, চণ্ডীতলা ২ ব্লকের বেগমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৩০ জন ছাত্রছাত্রীর ট্যাবের টাকা ঢোকেনি। হরিপালের দু’টি, তারকেশ্বর ও জাঙ্গিপাড়ার একটি করে স্কুলেও তাই।
বেগমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী বৃষ্টি বন্দ্যোপাধ্যায় বলে, ‘‘আমাদের প্রায় ৩০-৩৫ জনের টাকা ঢোকেনি। বিষয়টি স্কুল থেকে লিখিত ভাবে জানতে বলা হয়েছিল। আমি জানিয়েছি। প্রথমে ভেবেছিলাম, ব্যাঙ্কের কোনও সমস্যায় টাকা আসেনি। ব্যাঙ্কে খবর নিয়ে জানতে পারি, তা নয়। কী কারণে টাকা ঢোকেনি, স্কুল থেকে নির্দিষ্ট ভাবে আমাদের কিছু বলা হয়নি।’’ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি শীর্ষেন্দু পালের বক্তব্য, ‘‘স্কুলের তরফে স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রায় পাঁচশো পড়ুয়ার নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। সেখান থেকে ৩০ জনের টাকা আসেনি। এটা বড় অপরাধীদের কাজ। সংগঠিত অপরাধ। রাজ্য সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের কোনও ত্রুটি নেই। প্রধান শিক্ষক বাদে এসআই, ডিআই পোর্টাল লগ ইন করতে পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ হয়েছে।’’
বিষয়টি নিয়ে হুগলির ডিআই অর্থাৎ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সত্যজিৎ মণ্ডলকে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। জেলাশাসক মুক্তা আর্য ফোনে জানান, এ বিষয়ে ডিআই বলবেন। ডিআই মন্তব্য করতে চাননি শুনে বলেন, তিনি বলে দিচ্ছেন, ডিআইয়ের সঙ্গেই যেন যোগাযোগ করা হয়। পরে অবশ্য ডিআইয়ের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও সামনে এসেছে। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদকের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শিক্ষা দফতরের পোর্টালে হ্যাকার ঢুকে বসে আছে, রাজ্য সরকারের কেউ জানতে পারল না! এই সমস্ত হ্যাকার সব তৃণমূলের লোক।’’ শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘যে সমস্ত হ্যাকারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, সব বিজেপিশাসিত রাজ্যের। বিজেপি কোন মুখে তৃণমূলের কথা বলে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy