চুঁচুড়ার হালদার বাড়ির প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।
বয়স আনুমানিক সাড়ে চারশো বছর। কালের নিয়মে ঠাকুর দালান নতুন হলেও পুজোর নিয়মে নতুনের সংযোজন নেই। আজও কৃষ্ণনগড়ের শিল্পীর হাতেই তৈরি হয় প্রতিমা। ভোগের জন্য মিষ্টি বানান বাড়ির মহিলারাই। প্রতিপদের দিন ঈশান কোণে মা চণ্ডীর ঘট বসে। সে দিন থেকেই দশমীর দুপুর পর্যন্ত নিরামিষ রান্না করতে রাঁধুনি আসেন ওড়িশা থেকে। চুঁচুড়ার ষণ্ডেশ্বরতলার হালদার বাড়ির পুজো হয় পুরনো রীতি মেনেই।
কথিত আছে, একদা স্ত্রী কুসুম কুমারীকে নিয়ে পূর্বসূরী নবীনচন্দ্র হালদার এ বাড়িতে পুজোর সূচনা করেছিলেন। কাছেই গঙ্গাপাড়ের ষণ্ডেশ্বরতলা মন্দির ছাড়া তখন হাতেগোনা কয়েকটি বাড়ি ছিল সেখানে। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল হালদার বাড়ি। ষষ্ঠীর দিন হয় বোধনের পর পরিবারের পুরুষরা মাকে বরণ করেন। সপ্তমীর দিন দালানে শুরু হয় পুজো। ওই দিন কলাবৌ স্নান। মহাষ্টমীতে হয় মায়ের মূল আরাধনা। নবমীতে কৎবেল নিবেদন করা হয়। মায়ের ভোগে থাকে শুক্তো, তেঁতুলের টকের মতো খাবারও। দশমীতে মহিলারা মাকে বরণের পরে পুরুষেরা প্রতিমা কাঁধে করে গঙ্গায় নিয়ে বিসর্জন দেন। এরপরে বাড়িতে মাছ রান্না করার মধ্য দিয়ে নিয়মভঙ্গ করা হয়।
মহালয়ার মধ্যেই বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিবারের সব সদস্য এই বাড়িতে চলে আসেন। আসেন আত্মীয়-স্বজনেরা। প্রতি দিনই চলে এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া। পরিবারের বধূ সোমার কথায়, ‘‘পুজোর দিনগুলিতে বাইরের ঠাকুর দেখতে যাওয়াই হয় না। ঘরেই সকলের সঙ্গে আনন্দে মাতি। পাশাপাশি সকলে মিলে পুজোর জোগাড়েই সময় কেটে যায়।’’ তাঁর স্বামী বিশ্বনাথের কথায়, ‘‘পুজোর সময়ে সকলের এক সঙ্গে খেতে বসার আনন্দটাই আলাদা।’’
বর্তমান প্রজন্মের ছেলে হলেও পরিবারের সদস্য দেবজ্যোতি কিন্তু পুজোপাঠেই ব্যস্ত থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতেই বন্ধুবান্ধবেরা আসে। পুজোর পরে ওদের সঙ্গে আড্ডা দিই। বাড়ির মাকে ছেড়ে আর বেরোতে ইচ্ছা করে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy