তামিল পুকুরের পাড়ের গাছ কাটা নিয়েই বিতর্ক। গোঘাটের শ্যামবাজার পঞ্চায়েতের এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য নতুন পঞ্চায়েত গঠন হয়েছে। গ্রামোন্নয়নের কাজে এখনও হাত পড়েনি। তারই মধ্যে পঞ্চায়েতের লাগানো গাছ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠল গোঘাট-২ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত শ্যামবাজার পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে।
পঞ্চায়েতের সদস্য এবং গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তিপত্র গোপন করে পুকুর মালিকদের সঙ্গে প্রধান প্রভাত গোস্বামীর যোগসাজশে কয়েকশো গাছ বিক্রি করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, গাছ বিক্রির মোট অঙ্কের তিন ভাগের এক ভাগ পঞ্চায়েতের পাওয়ার কথা। বাকি এক ভাগ করে পাওয়ার কথা গাছ তদারকির দায়িত্বে থাকা গ্রামবাসী এবং পুকুরের অংশীদারদের। অনুমতি দেওয়ার জন্য (নো-অবজেকশন) দান হিসাবে সামান্য টাকা পুকুর মালিকরা জমা করেছেন পঞ্চায়েতের কাছে। কিন্তু পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে কোনও টাকা জমা পড়েনি বলে অভিযোগ। তা নিয়ে তদন্তের দাবিতে সোমবার ব্লক প্রশাসন ও বন দফতরে লিখিত অভিযোগ জানালেন ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য সাধন দে।
বিডিও দেবাশিস মণ্ডলের কথায়, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। প্রধানকে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছি।” আর বন দফতরের আরামাবগ রেঞ্জ অফিসার আসরাফুল ইসলাম বলেন, “গাছ কাটার আবেদনের পর আমাদের তরফে তদন্ত হচ্ছে। পঞ্চায়েত সদস্যর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওখানে গাছ কাটতে বারণ করা হয়েছে।’’
গ্রামের স্কুল সংলগ্ন তামলি পুকুরের পাড়ে বনসৃজন প্রকল্পে শ’তিনেক ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়েছিল প্রায় ১৮ বছর আগে বাম আমলে। সে সময়েই গাছ বিক্রির সময় এক তৃতীয়াংশ ভাগের চুক্তি হয়। পঞ্চায়েত সদস্য সাধন দের অভিযোগ, “আমার এলাকার গাছ কাটা হচ্ছে, তা আমাকে জানানো হয়নি। তা নিয়ে সাধারণ সভা বা দরপত্রও ডাকা হয়নি। পুকুর মালিকদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে গাছ বিক্রি হয়েছে।” তাঁর হিসেব, ‘‘প্রায় ৩০০ গাছের দাম হয়েছে মোট চার লক্ষ টাকা। সেই হিসাবে চুক্তি অনুযায়ী ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে জমা পড়ার কথা। সে টাকা মেলেনি। সে জায়গায় গাছ পিছু মাত্র ৫ থেকে ১০ টাকা মাত্র অনুদান নেওয়া হয়েছে।’’
পুকুরের মালিকদের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ উড়িয়ে প্রধান প্রভাত গোস্বামী বলেন, “সদ্য পদে এসেছি। আমাকে জানানো হয়েছিল, গ্রামবাসীর অংশীদারিত্বের পুকুর সেটি। অভিযোগ ওঠার পর পঞ্চায়েতের সঙ্গে পুকুর মালিকদের কোনও চুক্তিপত্র মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে সমস্ত সদস্য ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপাতত গাছ কাটা বন্ধ রাখা হবে।”
আর পুকুরের অংশীদারদের পক্ষে নিরঞ্জন কুন্ডু বলেন, “প্রায় ৪৫ গ্রামবাসীর অধীনে থাকা ওই পুকুর পাড়ের গাছগুলি আমাদেরই লাগানো। অতীতে পঞ্চায়েতের সঙ্গে কোনও চুক্তির কাগজও আমাদের নেই। অন্যায় ভাবে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy