Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ পিরজাদাদের
TMC

TMC: ভুরি ভুরি অভিযোগের পোস্টার প্রধানের নামে, অস্বস্তি তৃণমূলে

দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক পিরজাদা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছেন বলে খবর।

সীমানা পাঁচিল তৈরি হয়নি শ্মশানে।

সীমানা পাঁচিল তৈরি হয়নি শ্মশানে। নিজস্ব চিত্র।

দীপঙ্কর দে
জাঙ্গিপাড়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৩১
Share: Save:

দুর্নীতির অভিযোগে পোস্টার পড়ল হুগলির ফুরফুরা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মুখ খুলেছেন ফুরফুরা শরিফের এক পিরজাদা। একাধিক পিরজাদা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছেন বলেও খবর। গোটা বিষয়টি নিয়ে সরগরম জাঙ্গিপাড়া ব্লকের এই এলাকা। শোরগোল পড়েছে শাসক দলেও। প্রধান শামিম আহমেদ দুর্নীতির অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, পঞ্চায়েতের সব কাজ নিয়ম মেনে হয়েছে।

ফুরফুরা পঞ্চায়েতের পূর্ব দুর্গাপুর, ভীমপুর, তালতলা, হুসেনপুর প্রভৃতি জায়গায় ছাপানো ওই পোস্টার সাঁটা হয়েছে। ‘ফুরফুরা শরিফ এলাকার গ্ৰামবাসীবৃন্দ’-এর নামে লেখা ওই পোস্টারে রাস্তার ধারে বহু পুরনো গাছ কেটে বিক্রি, রাস্তা তৈরি না করে বা কাজ সম্পূর্ণ না করে টাকা আত্মসাৎ, নর্দমা তৈরিতে কারচুপি, শ্মশান তৈরি বা ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি করে লক্ষ লক্ষ আত্মসাতের অভিযোগের কথা লেখা হয়েছে।

পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে গ্রামবাসীদের অনেকেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। পূর্ব দূর্গাপুরের বাসিন্দা প্রফুল্ল দাস বলেন, ‘‘আমপানে ঘরের ছাউনি উড়ে গিয়েছিল। ক্ষতিপূরণ পাইনি। ১০০ দিনের কাজে গত বছর থেকে টাকা পাইনি।’’ সীমানা পাঁচিল-সহ বাকচা শ্মশান তৈরির জন্য। ৫ লক্ষ‍ ৭৩ হাজার ৭৫২ টাকা খরচ দেখিয়ে ফলক মারা হয়েছে। যদিও, পাঁচিল তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ। বাকচার বাসিন্দা অজিত মালিকের অভিযোগ, ‘‘শ্মশানের চারিদিকে পাঁচিল দেওয়া, বাগান করার কথা ছিল। সে সব না করে টাকা পকটে ঢুকেছে।’’

ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা কাশেম সিদ্দিকি বলেন, ‘‘রাজ্যব সরকার ফুরফুরার উন্নয়নের জন্যয প্রচুর টাকা দিচ্ছে। কিন্ত, ফুরফুরা পঞ্চাযেতের প্রধান সব এ দিক ও দিক করে দিচ্ছেন। ফুরফুরা হাসপাতালের সমস্ত গাছ কেটে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুরফুরা শরিফের দাদা হুজুরের মাজারের পাশে একটি শৌচাগার তৈরির খরচ দেখানো হয়েছে ৪৩ লক্ষ টাকা। একটি নর্দমা তৈরির খরচের হিসেব দেওয়া হয়েছে ৪২ লক্ষ‍ টাকা। প্রধানের এইসব দুর্নীতি নিয়ে পোস্টার পড়েছে। সব অভিযোগ সত্যি।’’

দেওয়ালে সাঁটা পোস্টার।

দেওয়ালে সাঁটা পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।

প্রধানের দাবি, পোস্টার পড়ার কথা তাঁর জানা নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকারি টাকা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে খরচ হয়। কারও কোনও অভিযোগ থাকলে পঞ্চায়েতে বা সরকারি দফতরে জানান। কোনও পিরসাহেবের যদি এত অভিযোগ থাকে, তা হলে আমাকে সরাসরি দেখাতে পারছেন না কেন? ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি হলে, প্রমাণ করে দেখান। সমস্ত অভিযোগ মিথ্যাা।’’ কাশেম সিদ্দিকি বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

সরব বিরোধীরাও। রাজ্যক বিজেপি সম্পাদক তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘রাজ্যেরর সমস্ত পঞ্চায়েত দুর্নীতিগ্রস্ত। সরকার তাতে মদত দিচ্ছে। ফল ভুগছেন মানুষ। ফুরফুরার প্রধানের নামে আগেও অভিযোগ উঠেছিল।’’

গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে। স্থানীয় বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা দলের অন্যতম মুখপাত্র। যদিও, ফুরফুরার প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ দলের অন্যতম রাজ্যা সম্পাদক দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘পোস্টারে কারও নাম না থাকলে সেই অভিযোগের উত্তর দেওয়া ঠিক নয়। তবে দলের নেতা বা প্রধান হিসাবে কেউ বেঠিক কাজ করলে, তাঁর সম্পর্কে দল ও প্রশাসন খোঁজখবর নেয় এবং ব্য বস্থা গ্ৰহণ করে।’’
বিষয়টি নিয়ে বিডিও (জাঙ্গিপাড়া) শীতাংশুশেখর শিটের প্রতিক্রিয়া, ‘‘নো কমেন্টস।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Panchayat Corruptiion Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy