হাওড়াতে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে সৌমাল্য চৌধুরী (চিহ্নিত)-র ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
চুরি করাটা পেশা হলেও সেটাই কি নেশাও ছিল? পুলিশের কাছে অন্তত তেমনটা দাবি করেছে আসানসোলের ‘উচ্চশিক্ষিত’ চোর সৌমাল্য চৌধুরী। এ নিয়ে চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনও পুলিশকে দেখিয়েছে সে। তার দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরার সময় সৌমাল্য দাবি করে যে সে ক্লিপটোম্যানিয়ায় আক্রান্ত। তা সারাতে মনোবিদের কাছে চিকিৎসা করিয়েছিল। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে একে চুরির নেশা বলা যেতে পারে। অর্থের লোভে নয়, এতে আক্রান্তরা চুরি করার ‘নেশা’য় পড়েন। তবে শাস্তি কমে যাওয়ার জন্য কি সৌমাল্য নিজেকে মানসিক রোগাক্রান্ত বলে দেখানোর চেষ্টা করছে না সে সত্যিই ক্লিপটোম্যানিয়াক, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ৯ জুন হাওড়ার আন্দুল স্টেশন রোডের একটি ফ্ল্যাটে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা সোনার গয়না চুরির ঘটনায় সৌমাল্য ও তাঁর সঙ্গী প্রকাশ শাসমলকে পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ। রবিবার হাওড়া আদালতে দু’জনকে পেশ করা হলে ৩ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। রবিবার রাত থেকেই তাদেরকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জেরায় সৌমাল্য স্বীকার করে, ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে একা থাকত। বাবা-মা দুজনেই চাকুরীজীবি ছিলেন। তাই বাড়িতে তাঁদের সঙ্গ পেতেন না। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর সৌমাল্য দীর্ঘদিন বেকার ছিল। ২০১৯ সালে বাবার চেষ্টায় খড়্গপুরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলে করণিক পদে অস্থায়ী চাকরি পায়। মাস ছয়েক সেখানে চাকরি করার পর আসানসোলে একটি বড়সড় চুরির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর তার চাকরি চলে যায়। সেই থেকে কার্যত বেকার ছিল সৌমাল্য।
পুলিশকে সৌমাল্য জানিয়েছে, আসানসোলে তাদের বাড়ির উল্টো দিকে একটি ফুলের দোকানের কর্মী ছিলেন প্রকাশই তার চুরির সাগরেদ ছিল। প্রকাশের সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্ব হয়। দু’জনে একই সঙ্গে দামি রেস্তরাঁয় খাওয়াদাওয়া করা ছাড়াও মাঝে মাঝে মদ্যপান করত। এমনকি, প্রকাশের আবদারে তাকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে একটি মোটরবাইকও কিনে দেয়। যা এখন আসানসোল পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে পাঁশকুড়ায় একটি ঘরভাড়া করে নিজেদের ডেরা বানান তারা। একটি স্কুটি কিনে সেখান থেকেই হাওড়া, হুগলি এবং অন্য জেলায় চুরির অপারেশন চালাতে শুরু করে। তবে সৌমাল্যর দাবি, চুরি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করলেও নিঃসঙ্গ ছিল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy