ড্রোনের সাহায্যে এ ভাবেই চলছে নজরদারি। রবিবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র
রাস্তার মোড়ে গল্পে মজে ছিলেন কয়েক জন যুবক। বুঝতেও পারেননি, মাথার উপরে চক্কর কেটে সেই ছবি তুলে নিয়েছে ড্রোন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই এসে হাজির পুলিশের গাড়ি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরিয়ে আড্ডা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল ওই যুবকদের।
এলাকার কোথায় কারা অযথা জটলা করছেন বা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা চিহ্নিত করে তাঁদের গ্রেফতার করতে এ বার ড্রোনের ব্যবহার শুরু করল হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল জানান, ‘জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন, ২০০৫’ অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ৩৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৮ জনকে ড্রোন দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ওই রাত থেকে রবিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত ৩০২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩৩ জনকে ড্রোন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ দু’দিনে ড্রোনের মাধ্যমে ধরা হয়েছে মোট ৬১ জনকে।
গত শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে ছিলেন, হাওড়া ‘রেড স্টার জ়োন’। সেখানে কড়া ভাবে লকডাউন বলবৎ করতে নির্দেশ দেন তিনি। এর পরেই শনিবার সকাল থেকে পথে নামে পুলিশ। ভাল কথায় কাজ না হওয়ায় শেষমেশ অবাধ্য হাওড়াকে সামলাতে বলপ্রয়োগ করতে হয়। কিন্তু শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বহু জায়গায় দেখা যায়, অযথা রাস্তায় ঘোরাঘুরি করা লোকজন চোর-পুলিশ খেলা শুরু করেছেন পুলিশের সঙ্গে।
সূত্রের খবর, দূর থেকে পুলিশের গাড়ির সাইরেনের শব্দ শুনে বা রুট মার্চ দেখেই লুকিয়ে পড়ছেন অনেকে। পুলিশ আসার খবর ফোনে জানিয়ে দিচ্ছেন অন্য জায়গায় থাকা পরিচিত এবং বন্ধুদের। যাতে আগেভাগেই তাঁরা সতর্ক হতে পারেন। পুলিশ ওই এলাকা বা মোড় পার হলেই আবার বেরিয়ে পড়ছেন সেই লোকেরা। ফের শুরু হচ্ছে জটলা। কেউ আবার হাতে ব্যাগ ঝুলিয়ে বাজার করতে যাওয়ার অছিলায় রাস্তায় ঘুরপাক খাচ্ছেন। এর পরেই বিনা প্রয়োজনে ঘুরে বেড়ানো লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে কড়া ভাবে ড্রোনের ব্যবহার শুরুর নির্দেশ দেন পুলিশকর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, কোনও একটি পাড়ায় না ঢুকে বেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে ড্রোনটি ওড়ানো হচ্ছে। ড্রোনের কন্ট্রোল-পর্দায় চোখ থাকছে পুলিশকর্তাদের। যেখানেই জটলা দেখা যাচ্ছে, সেখানে ড্রোনটির গতি কমিয়ে আরও কাছ থেকে সেটিরই ক্যামেরায় ছবি তোলা হচ্ছে। সেই ছবি দেখে এলাকা চিহ্নিত করছে পুলিশ। অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে জটলা করা লোকজনকে।
শুধু দিনে নয়। রাতেও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের ড্রোন। শিবপুর, সালকিয়া, গোলাবাড়ি, হাওড়া ময়দান চত্বর, মন্দিরতলা, লিলুয়া, সাঁকরাইল-সহ বিভিন্ন জায়গায় মূল রাস্তা থেকে ছাড়িয়ে পাড়ার গলি, মাঠ সর্বত্র চলছে নজরদারি। হাওড়া সিটি পুলিশের সদর দফতর থেকে বিভিন্ন থানায় পাঠানো হচ্ছে একাধিক দলকে। তাঁরাই ড্রোনের গতিবিধির উপরে নজর রাখছেন। রবিবার কমিশনারেটের বিভিন্ন থানা এলাকায় অবাধ্য লোকজনকে সামলাতে চলে আকাশপথে নজরদারি।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘লকডাউনে যাতে কেউ সরকারি নির্দেশ অমান্য না-করেন, সে দিকে নজর রাখতেই ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ অন্য দিকে, শনিবার রাত থেকে রবিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত আটটি গড়ি, চারটি টোটো এবং ৩৯টি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy