Advertisement
E-Paper

চুঁচুড়ায় জলপ্রকল্প গড়তে অর্থ দিলেন ক্ষেত্রমোহন

শ্রীরামপুরের ‘দানবীর’ ক্ষেত্রমোহন ছিলেন গরিবের পেটে দু’বেলা অন্ন জোগানো, ডাক্তার এনে অবৈতনিক চিকিৎসা, অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করার নায়ক।

ক্ষেত্রমোহন সা।

ক্ষেত্রমোহন সা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩৮
Share
Save

শিবরাত্রি উপলক্ষে ক্ষেত্র সা’র মেলা শুরু হয়েছে শ্রীরামপুরে। চলবে এক মাস। সময়ের স্রোতে অনেক পরিবর্তন সত্ত্বেও মেলার পরম্পরা অটুট। এ বার ১২৮তম বর্ষ। ১৮৯৭ সালে ক্ষেত্রমোহন সা এই মেলা চালু করেছিলেন। পারিবারিক মেলাটির সেই থেকেই সর্বজনীন রূপ।

শ্রীরামপুরের ‘দানবীর’ ক্ষেত্রমোহন ছিলেন গরিবের পেটে দু’বেলা অন্ন জোগানো, ডাক্তার এনে অবৈতনিক চিকিৎসা, অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করার নায়ক। তৎকালীন গ্রামীণ পরিবেশে সমাজের নীতিকথা বোঝাতে, সামাজিক অনুশাসন ঠিক রাখতে মেলায় পুতুল নাচের মাধ্যমে পৌরাণিক নানা কাহিনি তুলে ধরা হত তাঁর ব্যবস্থাপনায়। শিল্প ও কৃষিকাজে উৎসাহ দেওয়া হত প্রচুর পুরস্কার ইত্যাদির মাধ্যমে।

ক্ষেত্রমোহন লক্ষ্য করেছিলেন পচা পুকুর, ডোবা যেখানে মানুষ থেকে গরু-মোষের স্নান, কাপড় কাচা, বাসন মাজা সব হয়, সেই জলই পানীয় হিসাবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে, কলেরা, ম্যালেরিয়ার মতো মহামারির প্রকোপ ঘটছে। পরিস্রুত পানীয় জলের কথা ভেবে ১৯০৮ সালে তিনি শ্রীরামপুর পুরসভাকে অনুরোধ করলেন একটি জলপ্রকল্প তৈরির জন্য। সে জন্য ৯০ হাজার টাকা দান করার কথাও বলেছিলেন। শুধু শর্ত ছিল, গরিব প্রজাদের থেকে জলকর নেওয়া যাবে না।

আশ্চর্যের কথা, পুরসভা এই প্রস্তাব মানেনি কর নিতে না পারার অজুহাতে। আসলে ছিল জনপ্রিয়তার ঈর্ষা আর জাতপাতের প্রশ্ন। উচু জাতির লোকেরা কী করে নিচু জাতির দেওয়া জল গ্রহণ করবেন! তাই ক্ষেত্রমোহন সাহায্য করেছিলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভাকে।

জনপ্রিয়তার ঈর্ষার আরও একটি উদাহরণ দিই। ১৯১৩ সালের মেলায় পুরসভার তদানীন্তন ওভারসিয়ার নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় গরিব মিঠাইওয়ালা নুরখু হালুয়াই এবং অন্য অনেকের বিরুদ্ধে খারাপ খাবার দেওয়ার অজুহাতে তা বাজেয়াপ্ত করেন এবং তা নিজেদের মধ্যে বিলিবণ্টন করেন। ক্ষেত্রমোহন ব্যথিত হন। এই অন্যায় তিনি মানতে পারেননি। কারণ, ওভারসিয়ার শুধুমাত্র নিজে চেখেই বলেছিলেন, খাবার খারাপ।

ক্ষেত্রমোহন মামলা করেন শ্রীরামপুর আদালতে। ওভারসিয়ার নগেন্দ্রনাথকে দোষী সাব্যস্ত করে এক আনা আর্থিক জরিমানা, অনাদায়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাজতবাসের আদেশ দেয় আদালত। কোর্ট ফি আইনের ৩১ ধারায় আদেশ হয়, মামলার খরচ বাবদ চার টাকা চার আনা অভিযোগকারীকে দিতে হবে।

তথ্য: হারাধন রক্ষিত, প্রাবন্ধিক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

water project Chinsurah

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}