হাওড়ার রামকৃষ্ণপুরে স্বামী বিবেকানন্দের পদার্পণের ১২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। সেই স্মৃতি স্মরণীয় করে রাখতে ‘বিবেক দুয়ার’ তোরণের উদ্বোধন হল মঙ্গলবার। উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ।
কলকাতার বাদুড়বাগানের বাসিন্দা নবগোপাল ঘোষ ছিলেন রামকৃষ্ণের আশীর্বাদধন্য। রামকৃষ্ণের নাম জড়িয়ে থাকায় হাওড়ার ৮১ নম্বর রামকৃষ্ণপুর লেনে ২৫ কাঠা জায়গা কিনেছিলেন নবগোপাল। পরে ওই জমিতে বাড়ি করে স্ত্রী নিস্তারিণী দেবীকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন। যে বাড়িতে রয়েছে বিবেকানন্দের স্মৃতিও।
সাল ১৮৯৮। ৬ ফেব্রুয়ারি, মাঘী পূর্ণিমার দিন ১৫ জন সন্ন্যাসীকে নিয়ে তিনটি ডিঙি নৌকা করে বেলুড় মঠ থেকে রামকৃষ্ণপুর ঘাটে গিয়েছিলেন বিবেকানন্দ। ঘাট থেকে খোল-করতাল বাজিয়ে খালি পায়ে তিনি নবগোপালবাবুর বাড়ি যান। সোনার কৌটোয় রামকৃষ্ণদেবের অস্থিভস্ম নিয়ে গিয়েছিলেন নবগোপালবাবুর বাড়িতে। সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীরামকৃষ্ণের বিগ্রহ। তা ছাড়া, বার্লিন থেকে আনা একটি পট প্ৰতিষ্ঠা করেছিলেন। ধ্যানে বসে স্বামীজি প্রথম প্রণাম মন্ত্র তৈরি করেন ওই বাড়িতেই। ওই সব মুহূর্তের ১২৫ বছর উপলক্ষে ‘বিবেক তোরণ’ করার পরিকল্পনা নিয়েছিল রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মন্ত্রী অরূপ রায়ের সৌজন্যে সেই তোরণের উদ্বোধন হল মঙ্গলবার। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী গৌতমানন্দজি মহারাজ-সহ মঠের সন্ন্যাসীরা উপস্থিত ছিলেন সেখানে। ছিলেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ-সহ বিশিষ্টজনেরা। শুভকামনা জানিয়ে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
অধ্যক্ষ মহারাজ গৌতমানন্দজি বলেন, ‘‘হাওড়ার সঙ্গে স্বামীজীর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। রামকৃষ্ণপুরে নবগোপাল ঘোষের বাড়িতে বসে প্রণাম মন্ত্র তৈরি করেছিলেন। আজ যে ‘বিবেক দুয়ার’ তৈরি হল তা দেখে রামকৃষ্ণদেব ও স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করবেন মানুষ।’’
বস্তুত, ২০১৭ সালে হাওড়ার রামকৃষ্ণপুর ঘাট রাজ্যের হেরিটেজের তালিকায় স্থান পায়। স্বামী বিবেকানন্দ সার্ধশতবর্ষ জন্মোৎসব উদ্যাপন কমিটির প্রস্তাব বিবেচনা করে ঘাটটিকে ‘হেরিটেজ’-এর মর্যাদা দেয় পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন। তার আগে ২০১৩ সালে রামকৃষ্ণপুর ঘাটে একটি ফলক বসানো হয়।