এ ভাবে চলছে দামোদরের পার থেকে মাটি কাটা। নিজস্ব চিত্র Subrata Jana
নির্বিচারে কোপ পড়ছে দামোদরের পারের মাটিতে। নৌকো ভিড়িয়ে রাতের অন্ধকারে কাটা হচ্ছে মাটি। ছোট ছোট গাড়িতে বোঝাই করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। উদয়নারাযণপুরের পেঁড়োর পাড়বড়দা গ্রামের এই দৃশ্য রোজকার, দাবি স্থানীয়দের।
পেঁড়ো এবং নদের অপর পারে উদয়নারায়ণপুরের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী। তাঁদের ক্ষোভ, বছর খানেক ধরে অবাধে মাটি কাটার ফলে বিঘার পর বিঘা খেত দামোদরে হারিয়ে যাচ্ছে। নদের গতিপথ বদলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে চাষিদের মাথায় হাত। যদিও প্রশাসনের হুঁশ নেই! গোটা পরিস্থিতি একাধিক বার সরকারি বিভিন্ন দফতরে জানিয়েও সুরাহা না মেলায় এলাকাবাসীর প্রশ্ন, ‘‘প্রশাসন কি জেগে ঘুমোচ্ছে?’’
হাওড়া জেলা সেচ দফতরের আধিকারিক সন্দীপ গুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ তবে, উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজার বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ-প্রশাসনকে বলেছি অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে।’’
দামোদরের এক দিকে উদয়নারায়ণপুরের বড়দা গ্রাম। অন্য দিকে পেঁড়োর পাড়বড়দা গ্রাম। চাষিদের অভিযোগ, বড়দা থেকে নৌকো নিয়ে গভীর রাতে পাড়বড়দা গ্রামে এসে মাটি কাটা চলে। বাধা দিতে গেলে মাটি কাটতে আসা লোকেরা মারমুখী হয়ে ওঠেন। দিনের আলো ফুটলেই তাঁরা চলে যান। গ্রামবাসীদের অনেকের অভিযোগ, অবৈধ মাটি-কারবার চক্রের মাথায় প্রশাসন ও নেতাদের একাংশের হাত আছে। তাই তারা বুক ফুলিয়ে ওই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ ভয়ে সচরাচর কিছু বলতে সাহস পান না।
উদয়নারায়ণপুর বন্যাপ্রবণ। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, দামোদরের পার থেকে খাড়াই করে মাটি কাটার ফলে সহজেই চাষের জমি নদের গর্ভে চলে যাচ্ছে। পাড়বড়দা গ্রামের রবীন কোলে, নারায়ণ মণ্ডল, অরুণ দলুইরা চাষাবাদ করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রশাসন যদি অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে কিছু দিনের মধ্যে গোটা চাষজমিই জলে চলে যাবে। আমাদের সংসারও ভেসে যাবে।’’ সোমবার দুপুরে ওই এলাকায় দামোদরের পারে কয়েকটি নৌকো বাঁধা ছিল। আশপাশের লোকজন দাবি করলেন, সেগুলি মাটি-কারবারিদেরই।
স্থানীয় বালিচক পঞ্চায়েতের ওই এলাকার সদস্য তৃণমূলের রমা আদকের দাবি, ‘‘আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে মাটি কারবারিরা আমাদের হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসনকে জানিয়েছি। এর পিছনে বড় মাথা আছে।’’ তবে সেই ‘বড় মাথা’ কে বা কারা, তিনি খোলসা করেননি। ওই বেআইনি কাজে তৃণমূলের মদতের অভিযোগ প্রসঙ্গেও নিরুত্তর থেকেছেন।
এই অবস্থায় প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে, সে দিকেই তাকিয়ে গ্রামের মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy