গণেশ ঘোষের রহস্যমৃত্যু। — নিজস্ব চিত্র।
হাওড়ার দাশনগরে একটি বহুতলের আটতলা থেকে পড়ে এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের হাতে কিছু নতুন তথ্য উঠে এসেছে। যদিও মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। পুলিশ সূত্রের খবর, গণেশ ঘোষ নামে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র মৃত্যুর আগে তার মোবাইল থেকে এক বান্ধবীকে একাধিক মেসেজ পাঠিয়েছিল। যার মধ্যে একটি ছিল, ‘আমি তোকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি’।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনার তদন্ত বর্তমানে মেসেজগুলিকে ধরেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, গণেশ যে স্কুলে পড়ত, সেই স্কুলেরই এক ছাত্রীকে এই মেসেজগুলি করা হয়েছিল। তার সঙ্গে গত এক বছর ধরে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল গণেশের। মাঝখানে এক বার সম্পর্কে সমস্যা শুরু হলেও পরে সব ঠিক হয়ে যায়। গণেশের মৃত্যুর আগে তাদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, প্রয়োজনে ওই ছাত্রীকে ডেকেও জিজ্ঞাসবাদ করা হবে।
যদিও তদন্তকারীদের একাংশের ধারণা, প্রথম থেকেই এই ঘটনায় আত্মহত্যার যে তত্ত্ব নানা ভাবে উঠে আসছিল, এখন ওই মেসেজগুলি তাতে সিলমোহর দিল বলে ধরা যেতে পারে। তবে, ওই কিশোর আত্মহত্যা করেছে, এ কথা মানতে নারাজ তার পরিজনেরা। তার মা শুক্লা ঘোষের দাবি, তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। শুক্রবার এ বিষয়ে পুলিশের কাছে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
এ দিন বালিটিকুরি ব্রাহ্মণপাড়ার বাড়িতে বসে শুক্লা বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। কিন্তু এই খুনের অভিযোগ দাশনগর থানা লিখিত ভাবে নিতে চাইছে না।’’ তাঁরআরও অভিযোগ, যে বহুতলে গণেশের মৃত্যু হয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা এক বন্ধুর ফ্ল্যাটে গণেশ নিজে থেকে যায়নি। তাকে ফোন করে ওই বন্ধুই ডেকেছিল। তার বন্ধুর পরিবার সত্যি কথা বলছে না বলেও অভিযোগ গণেশের মায়ের। মৃতের পরিবারের অন্য সদস্যদেরও প্রশ্ন, রক্তাক্ত অবস্থায় আবাসনের নীচ থেকে গণেশকে উদ্ধারের পরেও পুলিশ কিংবা বন্ধুর পরিবার কেন তার বাড়িতে খবর দিল না? কেনই বা অ্যাম্বুল্যান্সের চালককে দিয়ে এসএসকেএমের রেজিস্টারে সই করানো হল? গণেশ উপর থেকে পড়ার পরে আর কেউ পৌঁছনোর আগেই কেন ওই বন্ধু নীচে নেমে আসে, সেই প্রশ্নও তুলেছে মৃতের পরিবার।
এ দিন মৃতের দিদিমা ঝর্না ঘোষ বলেন, ‘‘আমার নাতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রকৃত তদন্ত হোক। ও বিচার পাক।’’ এলাকার বাসিন্দা, তৃণমূলের প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি ত্রিলোকেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা পুলিশের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাব।’’
পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছে না, এই দাবি ঠিক নয় বলে জানিয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতেই ওই ছাত্রের পরিবারের তরফে দাশনগর থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রকৃত তদন্তের দাবি জানানো হয়। এর জন্য ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলাও করা হয়েছে। তদন্তে যদি খুনের তত্ত্ব সামনে আসে, তা হলে পুলিশ সেই অনুযায়ী মামলা করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy