প্রতীকী ছবি।
স্কুলছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ বিডিও-কে চিঠি পাঠিয়ে ছাত্রীর বিয়ে বন্ধের আর্জি জানিয়েছিল। শনিবার রাতে প্রশাসন ও হাওড়া জেলা চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা বিয়ে বন্ধ করে দেন। ঘটনা বাগনানের। চাইল্ড লাইনের হাওড়া জেলা কো-অর্ডিনেটর সঞ্জয় চৌধুরী বলেন, ‘‘ওই ছাত্রী স্কুলে ফিরবে। ওর বিয়ে বন্ধ করেছি।’’
ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন নয় বলেই দাবি চাইল্ড লাইনের। সঞ্জয় বলেন, ‘‘স্কুলে যাওয়ার কথা ছাত্রীদের। পরিস্থিতি ঠিকানা বদলে ওদের অনেককে পাঠিয়েছে শ্বশুরবাড়িতে। পরিস্থিতি ফের বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে। ওরা ফিরছে নিজের বাড়ি। পরের গন্তব্যস্থল স্কুল।’’
গত কুড়ি দিনে গ্রামীণ হাওড়ার কয়েকটি জায়গায় ১০ জন ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করেছে প্রশাসন ও জেলা চাইল্ডলাইন। কিছু ছাত্রীকে ‘শ্বশুরবাড়ি’ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে নিজের বাড়িতে, জানাচ্ছেন সঞ্জয়। তাঁর দাবি, ‘‘শুধু কুড়ি দিনেই জনা দশেক ছাত্রীর বিয়ে হয় বন্ধ করা হয়েছে, না হয় তাদের শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের বাড়ি ফেরানো হয়েছে। আমাদের অনুমান, সময় যত গড়াবে, ততই এ ধরনের ঘটনা বেশি করে সামনে আসবে।’’
সাঁকরাইলের একটি গ্রামের এক নাবালিকার ‘বিয়ে’ দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে। খবর পেয়ে ছাত্রীর শ্বশুরবাড়িতে হাজির হন চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা। তাকে ফিরিয়ে আনেন বাড়িতে। ছাত্রীর ‘শ্বশুর’ মুচলেকায় লিখেছেন, ‘বিবাহের বয়স না হওয়ার কারণে, আইনি বাধা থাকায়, আমি ছেলের স্ত্রীকে সুস্থ শরীরে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিলাম’। এমন আরও উদাহরণ রয়েছে বলে দাবি চাইল্ড লাইনের। সঞ্জয় বলেন, ‘‘যে সব নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে, তাদের অভিভাবকদের নির্দেশ দেওয়াছে, তাঁরা যেন মেয়েদের নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ান্তরে প্রশাসনের কাছে হাজিরা দেন।’’
বাগনান ২ ব্লকের একটি গার্লস স্কুলের তরফে গত শুক্রবার বিডিও-কে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, স্কুলেরই এক ছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে যোগাযোগ করা হয় চাইল্ডলাইনের সঙ্গে। শনিবার রাত্রে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিয়ে রোখা হয়। স্কুল সূত্রে খবর, এ বার মাধ্যমিকের টেস্ট দেওয়ার কথা ১৩৮ ছাত্রীর। তাদের মধ্যে ২০ জন পরীক্ষা দিতে আসছে না। উচ্চমাধ্যমিকের পাঁচ-ছ’জন ছাত্রীও টেস্ট দিতে আসছে না। সে সব ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে, তাদের সকলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, এমন আশঙ্কা করছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ওই স্কুলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কয়েক জন ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে বাকিদের অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা মেয়েদের স্কুলে পাঠাবেন। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় একটা বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে। আমরা সকলকেই স্কুলমুখী করব। এই সপ্তাহ থেকেই আমরা ছাত্রীদের বাড়ি যাওয়া শুরু করব। আমাদের প্রধান শিক্ষিকা এ বিষয়ে খুবই সক্রিয়। মেয়েরা যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যায়, তার জন্য ব্যক্তিগত ভাবেও উদ্যোগী তিনি। নবম শ্রেণির কয়েক জনও স্কুলে আসছে না। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।’’
সঞ্জয় বলেন, ‘‘গ্রামীণ হাওড়ার বাগনানে নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা সবথেকে বেশি। তার পরে রয়েছে সাঁকরাইল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy