হাওড়া পৌর নিগম। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ ছ’বছর ধরে হাওড়া পুরসভার নির্বাচন না করায় সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বহু বার। এ বার ফের নতুন সরকারি নির্দেশনামায় প্রশাসকমণ্ডলীর নাম ঘোষণা করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর কার্যত প্রমাণ করে দিল, পুরনো সিদ্ধান্ত থেকে সরেনি তৃণমূল সরকার। এমনই অভিযোগ হাওড়ার বাসিন্দাদের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ অক্টোবর রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর নোটিস জারি করে প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছে। সেখানে সদস্য-সংখ্যা নয় থেকে বাড়িয়ে ১১ করা হয়েছে। ওই নোটিস থেকে জানা গিয়েছে, গত তিন বছর ধরে চেয়ারপার্সন পদে থাকা সুজয় চক্রবর্তীকেই ফের ওই পদে রাখা হচ্ছে। উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরী এবং এইচআইটি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্ব মজুমদারকে নতুন দুই সদস্য হিসাবে আনা হয়েছে। নতুন করে প্রশাসকমণ্ডলী ঘোষণা করার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে পুর নির্বাচন আর কবে হবে?
হাওড়া পুরসভায় শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওই বছর বামফ্রন্টকে হারিয়ে পুরবোর্ডের দখল নেয় তৃণমূল। কিন্তু ওই বোর্ডের সময়সীমা ২০১৮ সালে শেষ হলেও রাজ্য সরকার নতুন করে নির্বাচন ঘোষণা করেনি। পুর দফতর নির্বাচিত প্রশাসকমণ্ডলীই তার পর থেকে পুরসভা পরিচালনা করে আসছে। এরই মধ্যে একাধিক বার পুরভোট করার চেষ্টা হলেও বালি পুরসভাকে হাওড়ার সঙ্গে সংযুক্ত করার কয়েক বছর পরে তা আলাদা করে দেওয়ার প্রক্রিয়াগত প্রশ্নকে সামনে আনায় তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীশ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যের চূড়ান্ত বিরোধ বেধে যায়। কার্যত তার পর থেকেই হাওড়ায় পুরভোট হওয়ার আশা শেষ হয়ে যায়।
এরই মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি করে নতুন প্রশাসকমণ্ডলীর কথা ঘোষণা করেন। বার বার পুরসভার সাফাই ও নিকাশির পরিকাঠামো নিয়ে জনসমক্ষেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন যিনি, উত্তর হাওড়ার সেই তৃণমূল বিধায়ককে প্রশাসকমণ্ডলীতে যুক্ত করা হয়েছে। অন্য দিকে, আগে প্রশাসকমণ্ডলীতে থাকা সত্ত্বেও কোনও বৈঠকে হাজির না হওয়া এবং গত প্রশাসকমণ্ডলীতে না থাকা এইচআইটি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে ফের সদস্য করা হয়েছে।
হাওড়ার এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এ সব না করে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা পুর নির্বাচন যাতে করা যায়, সেটা দেখা দরকার। নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকলে প্রশাসকমণ্ডলী দিয়ে দীর্ঘদিন এত বড় পুরসভা ভাল ভাবে চালানো যায় না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এ ভাবে একটা পুরসভা চালানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া, মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার অনুযায়ী তাঁদের দাবির কথা বলবেন কার কাছে? এই অধিকার কেড়ে নিয়ে নাগরিক জীবনকে অসম্মান করছে তৃণমূল।’’ বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাইয়ের দাবি, ‘‘খোদ মুখ্যমন্ত্রীই নবান্নে অভিযোগ করেছেন যে, হাওড়ার তৃণমূল নেতারা টাকা লুট করছেন। তা হলে তাঁদেরই প্রশাসকমণ্ডলীতে রেখে পুরসভার দায়িত্ব দিচ্ছেন কেন?’’
শুক্রবারই নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হাওড়ায় সাফাই বিভাগের কাজ ভাল হচ্ছে না। তিনি ফিরহাদ হাকিমকে বলেছেন, যাতে হাওড়ায় ওই বিষয়ের দায়িত্ব গৌতম চৌধুরীকে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy