আসামি নীলকান্ত সাহা। —নিজস্ব চিত্র।
ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল এক দম্পতিকে। ২০২২ সালের ওই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হল সন্তান। বাবা এবং সৎমাকে খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড হল হুগলির এক যুবকের। মঙ্গলবার হুগলির চুঁচুড়া আদালতের প্রথম অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সঞ্জয় শর্মা এই নির্দেশ দেন।
আসামির নাম নীলকান্ত সাহা। গত বুধবারই তাঁকে জোড়া খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। পুলিশ এবং আদালত সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ২৩ অগস্ট রাতে বলাগড়ের জিরাট স্টেশন রোডে একটি বাড়িতে ‘নৃশংস ভাবে’ খুন হন প্রৌঢ় দম্পতি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় তাঁদের। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই বছরের ১ অগস্ট থেকে জনৈক রামকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন চন্দ্রকান্ত সাহা এবং অঞ্জনা সাহা। তাঁদের ছেলে নীলকান্ত অন্যত্র থাকতেন। স্টেশন রোডে একটি পোশাকের দোকান ছিল চন্দ্রকান্তের।
খুনের দিন নীলকান্ত জিরাট স্টেশন রোডের ওই বাড়িতে যান। সেখানে বাবার দেখা না পেয়ে কিছু ক্ষণ অপেক্ষা সামনের একটি দোকানে অপেক্ষা করে ওই যুবক। বাবা বাড়িতে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ওই ঘরে ঢুকে তাঁর উপর ধারালো ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। নলি কেটে দেয়। বাবার সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত করে। একই ভাবে খুন করে সৎমাকেও। চিৎকার শুনে প্রথমে বাড়িওয়ালা রামকৃষ্ণ বেরিয়ে এসেছিলেন। কয়েক জন প্রতিবেশীও ছুটে আসেন। তখন তাঁরা নীলকান্তকে ছুটে পালাতে দেখেন।
হুগলির মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মোট ২১ জন সাক্ষী দিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলের পাশে যে গয়নার দোকানে নীলকান্ত অপেক্ষা করছিল, সেই গয়নার দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করতে সাহায্য করেছে।’’ এই মামলার বলাগড় থানার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন সোমদেব পাত্র। তিনি তদন্তের তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট জমা দেন।
মঙ্গলবার মামলার রায় ঘোষণার সময় আদালত উল্লেখ করে, ‘‘একটি শিশুকে ছোট থেকে বড় করতে অনেক কষ্ট করতে হয় বাবা-মাকে। সেই সন্তান যদি ঠান্ডা মাথায় নৃশংস ভাবে বাবা-মাকে খুন করে, সেই অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডই হয়।’’
সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে অকাট্য প্রমাণ তদন্তকারী অফিসার পেশ করেছেন এবং সাক্ষীরা যে সাক্ষ্য দেন তার ভিত্তিতেই বিচারক সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করেছেন। সমাজের জন্য একটা বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।’’ যদিও অভিযুক্তের পক্ষের আইনজীবী সুদীপ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy