পণের জন্য স্ত্রীর উপর অত্যাচার করতেন। বাদ পড়েনি দুই সন্তানও। দুধের শিশুকেও ছুরি মেরে হত্যার চেষ্টা করেন। সেই অপরাধ প্রমাণ হওয়ার পর হুগলির যুবককে দশ বছরের কারাদন্ড দিল আদালত। মঙ্গলবার চুঁচুড়া আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালত এই নির্দেশ দিয়েছেন। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে ছুরি মেরে খুনের চেষ্টায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মগরা থানার বাঁশবেড়িয়ার গ্যাঞ্জেস জুটমিল এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ পাশি।
আদালত সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে সন্দীপ পাশির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর এলাকারই বাসিন্দা জ্যোতি রাজভরের। বিয়ের পর থেকে পণের জন্য স্ত্রীর উপর অত্যাচার করতেন সন্দীপ। তাঁদের দুই সন্তান। পণের জন্য স্ত্রীর পাশাপাশি ৩ বছর এবং এক বছরের সন্তানকেও অত্যাচার করতেন সন্দীপ। মাঝে মধ্যে অত্যাচারের ‘মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে’ দুই ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যেতেন জ্যোতি। কিন্তু ২০২৩ সালে ১৯ শে মে আর সেই সুযোগ পাননি জ্যোতি। অভিযোগ, পারিবারিক অশান্তি সময় বাড়িতে ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন সন্দীপ। দুই সন্তানের গলায় ও বুকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। জ্যোতির মা নাতিদের বাঁচাতে গেলে তাঁকেও ছুরি দিয়ে আঘাত করেন সন্দীপ। রক্তাক্ত অবস্থায় চার জনকে উদ্ধার করেছিলেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের ভর্তি করানো হয়েছিল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। মগরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। তার প্রেক্ষিতে সন্দীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮, ৩০৭ এবং ৩২৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল। মামলার সরকারি আইনজীবী অমিয় সিংহ রায় বলেন, ‘‘মোট ১০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন হুগলি জেলে বন্দি সন্দীপ পাশি। সেখান থেকে মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন তিনি। আদালত তাঁকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন:
জ্যোতির বাপের বাড়ির লোকজন আদালতের রায়কে স্বাগত জানান। সন্দীপের শ্বশুর অলোক রাজভর বলেন, ‘‘আমরা আদালতের রায়ে খুশি। মেয়ে-জামাই নিজেরাই দেখাশোনা করে বিয়ে করেছিল। আমরা অনুষ্ঠান করে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই পণের জন্য মেয়ের উপর অত্যাচার শুরু করল জামাই। দুই ছেলেকেও ছাড়ত না ও। ঘটনার দিন তাদের ছুরি দিয়ে আঘাত করে। আমরা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচাই ওদের।’’