পুলিশের সঙ্গে বৈঠকের পর নবান্ন অভিযান স্থগিত করেছিলেন ‘বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী’দের বিভিন্ন সংগঠন। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসনের তরফে ‘জবাব না মেলায়’ নবান্ন অভিযান করবে বলে হুঁশিয়ারি দিল পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী এবং চাকরিহারা ঐক্যমঞ্চ।
মঙ্গলবার তাদের তরফে পুলিশ প্রশাসনকে ইমেল করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, গত ১৮ এপ্রিল তাদের সঙ্গে বৈঠক করে পুলিশ-প্রশাসনের বড় কর্তারা নবান্ন অভিযান স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছিল। কথা ছিল, রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে দাবিদাওয়া পূরণের বিষয়টি জানানো হবে। কিন্তু সেই বৈঠকের পরে ১১ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও কোনও ‘জবাব’ আসেনি পুলিশের তরফে। তাই ইমেল করে জানানো হল চলতি সপ্তাহের মধ্যে কোনও পদক্ষেপ করা না হলে আবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। তাঁদের একাংশের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নেতাজি ইন্ডোরে বৈঠক করেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন শুধু তাঁদের সঙ্গেই বৈঠক করেছেন, কেন ‘বঞ্চিত’দের সঙ্গে কথা বলছেন না, এই প্রশ্ন তুলে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে বৈঠকের দাবি করেছিল ‘বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী’দের একাধিক সংগঠন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক না হলে নবান্ন অভিযান হবে। শেষমেশ সেই বৈঠক হয়নি। ‘বঞ্চিত’রা নবান্ন অভিযানের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্রসমাজ’। তারা এর আগে নবান্ন অভিযান করেছিল আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে। বঞ্চিতদের আহ্বানে তারাও সাড়া দিয়েছিল। তারাও নবান্ন অভিযানে যোগ দেবে বলে জানিয়েছিল।ওই অভিযানে ধর্মতলা থেকে শুভেন্দু অধিকারী যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছিল।
তবে গত ১৯ এপ্রিল ভবানী ভবন, লালবাজার এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে মঞ্চের নেতাদের বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকে পুলিশের শীর্ষকর্তারা মঞ্চের নেতাদের আশ্বাস দেন, তাঁদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সরকারকে জানানো হবে। কথা বলা হবে মুখ্যসচিবের সঙ্গে। যত দ্রুত সম্ভব যাতে তাঁদের সমস্যার সমাধান করা যায়, তাঁরা সেই চেষ্টা করবেন বলে আশ্বাস দেন পুলিশকর্তারা। তার পরেই নবান্ন অভিযান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক শুভদীপ ভৌমিক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের লোকজন এখন মন্দির উদ্বোধনে ব্যস্ত। আমরা আর ১০-১২ দিন সময় দিলাম। ইমেল পাঠিয়েছি। জবাব না এলে এর মধ্যেই নবান্ন অভিযানের দিন ঘোষণা করা হবে।’’