Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
CPM

CPM: ‘রেকর্ড বুক’ চালুর নির্দেশ সিপিএমের

নতুন বছর থেকে দলের প্রত্যেক সদস্যের  জন্য ‘রেকর্ড বুক’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হুগলি জেলা সিপিএম।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:৪৪
Share: Save:

বাৎসরিক মূল্যায়নের সময় সদস্যদের কাজকর্ম আতসকাচের নীচে ফেলা হয়। এটাই সিপিএমে বহুকালের দস্তুর। অথচ বাস্তব বলছে, হুগলিতে সিংহ ভাগ দলীয় সদস্যের কাজের মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ‘রেকর্ড বুক’ নেই। ফলে, কোন কর্মসূচিতে কে হাজির থাকলেন, কে থাকলেন না, গরহাজিরার কারণ-ই বা কী, তার কোনও তথ্য এবং ব্যাখ্যা দলের কাছে থাকে না। জেলা নেতৃত্বের কাছে ‘উদ্বেগজনক’ বিষয় হল, সদস্যপদ পুনর্নবীকরণের আগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সদস্যদের রেকর্ড বুক ‘পর্যালোচনা’ হয় না। এই অভ্যাসে দাঁড়ি টানতে চায় দল। তাই নতুন বছর থেকে দলের প্রত্যেক সদস্যের জন্য ‘রেকর্ড বুক’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হুগলি জেলা সিপিএম। দলীয় সূত্রে খবর, বিষয়টি সাম্প্রতিক জেলা সম্মেলনে আলোচনায় উঠেছিল।

‘পার্টি সংগঠন’ শীর্ষক একটি রিপোর্টে জেলা সিপিএমের পর্যবেক্ষণ— সদস্যপদ পুনর্নবীকরণের সময় অল্প কিছু শাখায় সদস্যদের কাজের রেকর্ড বুক পর্যালোচনা করা হয়। সংখ্যায় তা খুবই নগণ্য। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শাখায়, এমনকি অনেক এরিয়া কমিটিতে সদস্যদের কাজের যথাযথ রেকর্ড নেই। এই কাজটি করতে না পারলে সক্রিয়তার যথাযথ মূল্যায়ন হয় না।’ সে কারণে, চলতি বছর থেকে প্রতিটি এরিয়া এবং শাখা কমিটিতে রেকর্ড বুক চালুর কথা বলেছে সিপিএম।

সিপিএমে দলীয় সদস্যপদ পুনর্নবীকরণের সময় বেশ কয়েকটি সূচক খতিয়ে দেখা হয়। কিন্তু বাস্তবে তা আদৌ করা হয় কিনা, সে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টেই। সেখানে লেখা হয়েছে, দলীয় সদস্যদের ৩০-৪০ শতাংশই ‘নিষ্ক্রিয়’। তাঁরা শাখার সভায় নিয়মিত আসেন না। থাকেন না কোনও কর্মসূচিতে। ধর্মঘটেও যোগ দেন না। নির্বাচনের কাজেও তাঁদের পাওয়া যায় না। অথচ, শুধুমাত্র ‘লেভি’ দিয়েই পার্টিতে থেকে যান। এই সব বিষয় খতিয়ে দেখে সিপিএম জেলা কমিটির সাফ বার্তা— এই অভ্যাসে ছেদ টানতে হবে।

সিপিএম নেতৃত্বের অনেকে মনে করছেন, বিধানসভা ভোটে বামেরা কোনও আসন না পেলেও, গত কয়েক বছরে দলের সক্রিয়তা অনেকটাই বেড়েছে। তা সম্ভব হয়েছে মূলত তরুণ, উদ্যমী কর্মীদের জন্য। তাঁরাই দলের ‘সম্পদ’। গুণগত মান এবং সক্রিয়তার নিরিখে সদস্যদের চার শ্রেণিতে ভাগ করেছে সিপিএম। প্রথম শ্রেণিতে রয়েছেন সে সব সদস্য, যাঁদের ‘জেদ অদম্য’। ‘লড়াকু মানসিকতা’র এই কর্মীদের কোনও পরিস্থিতিতেই ‘দমিয়ে’ রাখা যায় না। দ্বিতীয় শ্রেণিতে রয়েছেন এমন সদস্যেরা, যাঁরা কর্মসূচিতে থাকেন, কিন্তু দলীয় সংগঠনের কাজে যে ধরনের ‘জেদ ও ইচ্ছা’ থাকা দরকার, তা তাঁদের নেই। তৃতীয় শ্রেণির সদস্যেরা চলেন নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো। কখনও তাঁরা কর্মসূচিতে থাকেন। কখনও থাকেন না। চতুর্থ শ্রেণির সদস্যেরা সম্পূর্ণ ‘নিষ্ক্রিয়’। সক্রিয় করা না গেলে তাঁদের ‘অব্যাহতি’ দেওয়াই শ্রেয় বলে মত জেলা নেতৃত্বের।

নিষ্ক্রিয়দের সম্পর্কে রিপোর্টে লেখা হয়েছে— তাঁরা এমন কিছু জায়গায় খুব ‘সক্রিয়’, যেখানে দলের ‘ভালর থেকে খারাপ’ বেশি হয়। সক্রিয়দের ‘নিষ্ক্রিয়’ করতে সাহায্য করেন তাঁরা। শুধু তা-ই নয়, নিষ্ক্রিয়দের মধ্যে একটা ‘অনৈতিক ঐক্য’ গড়ে ওঠে। তাঁরা ‘সক্রিয়’ নেতৃত্ব চান না।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy