পিঙ্কি কর্মকারের কোলে তাঁর একমাত্র সন্তান রিকি। —নিজস্ব চিত্র।
তিন বছরের একমাত্র ছেলের ব্রেন টিউমার। প্রাণ বাঁচাতে দ্রুত অস্ত্রোপচার করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে সে অস্ত্রোপচারের খরচ কী করে জোগাড় করবেন, তা ভেবেই দিশেহারা হুগলির কর্মকার দম্পতি।
হুগলি স্টেশন এলাকায় লোহারপাড়ার বাসিন্দা রাজেশ কর্মকার পেশায় কাঠের মিস্ত্রি। স্ত্রী পিঙ্কি কর্মকারের মতোই একমাত্র সন্তান রিকিকে নিয়ে অসহায় বোধ করছেন তিনি। ওই দম্পতি জানিয়েছেন, আড়াই বছর বয়সে রিকির মাথার যন্ত্রণা ও বমির উপসর্গ দেখা দেয়। কয়েক দিনের মধ্যেই তার দু’পা অসাড় হয়ে গিয়ে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে পরীক্ষার পর রিকিকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছিল। সেখান থেকে রেফার করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সিটি স্ক্যানে রিকির মস্তিষ্কে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। চার মাস পরে অস্ত্রোপচারের তারিখ দেওয়ায় বাধ্য হয়েই রিকিকে নিয়ে ২৪ মার্চ বেঙ্গালুরু রওনা হন তাঁরা। ৩০ মার্চ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেল্থ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সে অস্ত্রোপচার হয় রিকির। সে সময় রিকির মাথার পিছন দিকে একটি টিউব বসিয়ে দেওয়া হয়। সেরে ওঠে রিকি। তবে লকডাউনে বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়েন রাজেশরা। ধীরে ধীরে হাতের টাকাকড়ি শেষ হয়ে যায়। বাড়ি ফিরেও দীর্ঘদিন রুজিরোজগার ছিল না রাজেশের। কোনও রকমে সংসার চলছিল।
সম্প্রতি ফের অসুস্থ হয়ে পড়ে রিকি। এমআরআই-এ দেখা যায়, টিউমার ফের মাথাচাড়া দিয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, রিকির বয়স কম হওয়ায় অস্ত্রোপচারে গোটা টিউমার নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। ফের অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। তবে ১৮ অগস্ট হাসপাতালে ভর্তির তারিখ পাওয়া গেলেও অস্ত্রোপচারের খরচের কথা ভেবেই ঘুম ছুটেছে দম্পতির। রাজেশ বলেন, ‘‘গত বার রিকির চিকিৎসা করাতে অনেক ধারদেনা হয়েছিল। তা এখনও শোধ করে উঠতে পারিনি। কোনও রকমে সংসার চলছিল। কী ভাবে কী হবে, বুঝে উঠতে পারছি না।’’ পিঙ্কি বলেন, ‘‘গত বছর অপারেশনের পর ছেলে সেরে ওঠায় নিশ্চিন্ত ছিলাম। ফের অপারেশনের কথা শুনে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy