ভবঘুরে চিত্তরঞ্জন। নিজস্ব চিত্র।
‘এক মুখ দাড়ি গোঁফ, অনেক কালের কালো ছোপ ছোপ’ নিয়ে চুঁচুড়া শহরে ঘুরে বেড়াতেন চিত্তরঞ্জন মাহাত। তাঁর বাড়ি পুরুলিয়া। কিন্তু চুঁচুড়ার ‘ফুটপাতে একা একা’ জীবন কাটছিল তাঁর। সম্প্রতি এক পুলিশকর্মীর সহায়তায় সাত বছর পর পরিবারে ফিরতে চলেছেন তিনি।
চুঁচুড়া শহরের ঘড়ির মোড়, খরুয়াবাজার, আখনবাজার বাসস্ট্যান্ডে সারাদিন ঘুরতে দেখা যেত চিত্তরঞ্জনকে। রাতে তাঁর ঠিকানা ছিল ইমামবাড়া হাসপাতাল। তাঁর জট পড়া চুলে ‘উকুনের পরিপাটি সংসার’ ছিল কি না জানা যায়নি। তবে লোকের কাছে চেয়ে চিন্তেই দিন কাটত তাঁর।
চুঁচুড়া পুলিশ লাইনের কর্মী সুকুমার উপাধ্যায় সম্প্রতি বসেছিলেন খাবারের দোকানে। সেখানেই তিনি দেখেন চিত্তরঞ্জনকে। তখনই সুকুমার নাম, ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁকে। তার জবাবে ভবঘুরে চিত্তরঞ্জন জানান, পুরুলিয়ার মানবাজার থানার অন্তর্গত গোপালনগর পঞ্চায়েতের খাটচিরি গ্রামে বাড়ি তাঁর। এর বেশি তিনি নিজের ব্যাপারে জানাতে পারেননি। সে দিন চিত্তরঞ্জনের একটি ছবি তুলেছিলেন সুকুমার। পরে সেই ছবি পাঠিয়েছিলেন মানবাজার থানায় থাকা তাঁর এক পুরনো সহকর্মীকে।
সহকর্মীর মারফত সুকুমার জানতে পারেন, সাত বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন চিত্তরঞ্জন। তার পর থেকে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর পর মানবাজার থানার সাহায্যে সুকুমার কথা বলেন চিত্তরঞ্জনের পরিবারের সঙ্গে। পাশাপাশি চুল-দাড়ি কাটার ব্যবস্থা করে চিত্তরঞ্জনকে নতুন জামা-কাপড় কিনে দেন তিনি।
বুধবার চিত্তরঞ্জনের দাদা অধিষ্ঠ মাহাত আসেন চুঁচুড়ায়। সাত বছর পর হারানো ভাইকে খুঁজে পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি তিনি। ভাইকে ফেরানোর ব্যবস্থা করায় সুকুমারকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন অধিষ্ঠ। তিনি বলেছেন, ‘‘বছর সাতেক আগে ভুল করে বাঁকুড়ার বাসে উঠে পড়েছিল ভাই। তার পর কোনও ভাবে এখানে চলে আসে। আমরা অনেক খুঁজেছি। পুজো দিয়েছি। কিন্তু ভাইয়ের কোনও খোঁজ পাইনি।’’ বুধবার বেলায় চিত্তরঞ্জনকে নিয়ে অধিষ্ঠ রওনা দিয়েছেন পুরুলিয়ায়। তাঁদের সঙ্গে গিয়েছেন সুকুমারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy