প্রতীকী ছবি।
প্রায় সাড়ে চার বছর আগে শুরু হয়েছিল আমতার মুক্তিরচক গণধর্ষণ মামলার শুনানি বা সাক্ষ্যগ্রহণ। আমতা আদালতে তার শেষ পর্ব আগামী ২২ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি। তা সাঙ্গ হলেই চলবে আসামিদের জেরা এবং সওয়াল-জবাব। তারপরেই রায়দান।
২২-২৫ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য দেবেন মামলার তদন্তকারী অফিসার তথা আমতার তৎকালীন সার্কেল ইনস্পেক্টর (সিআই) শুভাশিস চক্রবর্তী। তিনিই মামলার শেষ এবং মূল সাক্ষী। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সাক্ষ্যগ্রহণেই বেশি সময় লাগে। বাকি দু’টি পর্বে এত সময় লাগে না।
২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ মুক্তিরচক গ্রামের দুই তৃণমূল নেতা-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে জোর করে একটি বাড়িতে ঢুকে এক মহিলা ও তাঁর জেঠশাশুড়িকে ধর্ষণ এবং তাঁদের শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত নিয়ে নিগৃহীতারা উলবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে বহুদিন ভর্তি ছিলেন।
শুনানি শেষ পর্বে এসে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিগৃহীতারা। তাঁদের মধ্যে একজন বলেন, ‘‘আমরা সুবিচারের আশায় দিন গুনছি।’’ তাঁদের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, ‘‘মামলা যেহেতু শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে, তাই ওই মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ প্রহরা আরও বাড়ানো উচিত।’’ গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, দুই মহিলার বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরায়
কোনও ফাঁক নেই।
গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে বরুণ মাখাল রঞ্জিত মণ্ডল নামে অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা-সহ ১০ জনকেই পুলিশ গ্রেফতার করে। ৮৭ দিনের
মাথায় পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। ২০১৪ সালেরই
জুলাই মাসে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়। ওই মাসেই মামলাটি শুনানির জন্য আমতা আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সাক্ষী করা হয়
৪২ জনকে।
তবে তদন্ত ও চার্জশিট পেশ যত দ্রুত হয়, সেই গতি মামলার শুনানি চলাকালীন না-থাকায় দুই নির্যাতিতা এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ২০১৫ সালের অগস্ট মাস নাগাদ শুরু হয় শুনানি। পুলিশ জানায়, প্রথমে সরকারি আইনজীবী ঠিক না-হওয়া, ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়া, সাক্ষী পুলিশ আধিকারিক এবং চিকিৎসকদের অনেকে নির্দিষ্ট দিনে সাক্ষ্য দিতে না-আসায় শুনানি বারবার পিছিয়েছে। দু’বার বিচারকও বদলি হয়েছেন।
এ দিকে, চার্জশিট পেশ হয়ে যাওয়ার পরেও হাইকোর্ট থেকে অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় দুই নির্যাতিতার পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অভিযুক্তরা তাঁদের উপরে হামলা করতে পারে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান তাঁরা। যদিও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই দুই মহিলার বাড়ির সামনে হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিশের অস্থায়ী শিবির বসানো হয়। অভিযুক্তেরা জামিন পাওয়ায় দুই মহিলার জন্য বাড়তি নজরদারিরও ব্যবস্থা করে পুলিশ।
জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের কর্তারা অবশ্য জানান, অভিযুক্তেরা জামিন পেলেও গ্রামে ঢুকতে পারবে না। আদালতের নিষেধ রয়েছে। সেটা কঠোর ভাবে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy