অগুনতি: সঙ্কীর্ণ রাস্তার সিংহভাগই দখলে নিয়ে যাত্রী পরিবহণ করছে টোটো। হাওড়ার জি টি রোডে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় চলা অজস্র বেআইনি টোটো বন্ধ না করে এ বার সেগুলিকে পরিবহণ দফতরের নির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধার কাজ শুরু করল হাওড়া জেলা প্রশাসন। টোটোর সঙ্গে যেহেতু বহু মানুষের রুজি-রুটি জড়িয়ে রয়েছে, তাই রাজ্য পরিবহণ দফতরের নির্দেশ মতো জেলা প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এর জন্য এক দিকে যেমন গ্রামীণ হাওড়ার পঞ্চায়েত এলাকায় চলা সমস্ত বেআইনি টোটোর রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু হয়েছে, তেমনই হাওড়া পুরসভা এলাকায় চলা সমস্ত টোটোকে নথিভুক্ত করে আইনানুগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। জেলা প্রশাসনের যুক্তি, টোটোর সংখ্যা বৃদ্ধিতে রাশ টানতেই এমন পদক্ষেপ। যদিও এতে আসল উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে কিনা, সেই প্রশ্নও থাকছে।
জেলা পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্য পরিবহণ দফতর থেকে রাজ্যের সমস্ত আঞ্চলিক পরিবহণ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গ্রামাঞ্চলে চলা সব ই-রিকশা বা টোটোকে বাহন পোর্টালের মাধ্যমে নথিভুক্ত করে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে এই নির্দেশ আসার পরেই কাজ শুরু হয়। পরিবহণ দফতর নির্দেশ দিয়েছে, রেজিস্ট্রিকৃত টোটোগুলি একমাত্র নিজস্ব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাত্রী বহন করতে পারবে। বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড়া সেগুলি এর বাইরে যেতে পারবে না। কোনও ভাবেই জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক, বাস চলে এমন রাস্তা এবং বড় রাস্তায় টোটো চালানো যাবে না। একমাত্র এলাকার ভিতরের ছোট রাস্তায় চলতে পারবে টোটো।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এই সব টোটোর রেজিস্ট্রেশন করার সময়ে বাহন পোর্টালের মাধ্যমে চালকের নাম, বাসস্থানের ঠিকানা, আধার বা ভোটার কার্ড জমা দিতে হবে। যাঁরা দিতে পারবেন না, তাঁদের টোটো রেজিস্ট্রেশন করা যাবে না। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, কোনও টোটোর মালিকের বাড়ি যদি কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতের শেষ প্রান্তে হয়, তা হলে তিনি আবেদনের ভিত্তিতে পাশের পঞ্চায়েত এলাকাতেও টোটো চালাতে পারবেন।
এ দিকে, হাওড়া শহরে টোটো নিয়ে একটি বিস্তারিত সমীক্ষা চালিয়ে জেলা প্রশাসন, হাওড়া সিটি পুলিশ ও আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর একযোগে এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, বর্তমানে সেখানে মোট ১৩৫টি রুটে টোটো বা ই-রিকশা চলে। হাওড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক জানান, এই টোটোগুলিকে আগে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ২০ হাজার টোটো চলছে বলে একটা হিসাব পাওয়া গিয়েছে। এর বাইরে কোনও টোটোকে আইনি অনুমোদন দেওয়া হবে কিনা, তা নির্ধারিত রুটের টোটোর সংখ্যা ও চাহিদা দেখে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। যদিও পরিবহণ দফতরেরই কর্তাদের একাংশের মতে, হাওড়া শহরে ২০ হাজার নয়, আরও বেশি টোটো চলে।
আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ২০ হাজারের মতো টোটোর একটা তালিকা তৈরি হয়েছে। এই টোটোগুলিকে পরিবহণ দফতরের বাহন পোর্টালে আবেদনের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে। এই টোটোগুলি চলার জন্য মোট ১৩৫টি রুট ঠিক করা হয়েছে। নির্দিষ্ট রুটেই এই টোটো চালাতে হবে।’’
আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, টোটোর ব্যাটারির পেটেন্ট নিয়ে যে আইনি জটিলতা ছিল তা কেটে গিয়েছে। যে ধরনের ব্যাটারি এখন থেকে টোটোয় লাগানো হবে, তা বাহন পোর্টালে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy