Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Blood donation camp

তৃণমূলের ‘স্বাস্থ্যকর কোন্দলে’ মিটছে রক্তসঙ্কট

গত ২৫ মে নৈসরাইতে রক্তদান শিবির শুরু করেন জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের অনুগামী বলে পরিচিত রাজেশ চৌধুরী ও ব্লক সভাপতি পলাশ রায়রা।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২১ ০৭:৩৯
Share: Save:

তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ আরামবাগে নতুন কিছু নয়। মাঝেমধ্যে সেই ‘কোন্দলের’ জেরে রক্তও ঝরে। এখন অবশ্য সেই ‘দ্বন্দ্ব’ থেকে সুফল মিলছে। শাসক দলের পরস্পর-বিরোধী গোষ্ঠীগুলি এখন রক্তদান শিবিরের প্রতিযোগিতায় মেতেছে। যার ফলে, মহকুমা হাসপাতলের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তসঙ্কট সামলানো গিয়েছে অনেকটাই। খুশি সাধারণ মানুষও।

কেমন সেই প্রতিযোগিতা?

গত ২৫ মে নৈসরাইতে রক্তদান শিবির শুরু করেন জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের অনুগামী বলে পরিচিত রাজেশ চৌধুরী ও ব্লক সভাপতি পলাশ রায়রা। গত ১ জুন রবীন্দ্রভবনে রক্তদান শিবির থেকে ২৯০ ইউনিট রক্ত মেলে। গত ৫ জুন মুথাডাঙা সমবায় চত্বরে, ১৪ জুন সালেপুর গির্জাতলায়, ১৬ জুন কালীপুর কলেজ-সহ মোট ১৪টি রক্তদান শিবির করেন পলাশরা। প্রতিটি থেকে গড়ে ৬০-৭০ ইউনিট রক্ত সংগৃহীত হয়।

পাশাপাশি, ‘দিলীপ-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত পুরশুড়ার কিঙ্কর মাইতিরাও সোমবার থেকে পুরশুড়া ব্লক এলাকায় রক্তদান শিবির শুরু করেছেন। ওই দিন শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতে ৬১ জন রক্ত দিয়েছেন। আগামী ২৫ জুন শিবির আছে শ্যামপুর পঞ্চায়েতে আর ২ জুলাই কেলেপাড়া পঞ্চায়েত এলাকায়।

অন্য দিকে, আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারকে সামনে রেখে গত ২৮ মে রবীন্দ্রভবন, গত ৩ জুন কালীপুর মহাবিদ্যালয়, ১২ জুন বাদলকোনা, ১৮ জুন চাঁদুর এবং ২০ জুন ভাটার মোড়ে রক্তদান শিবির করেছেন তৃণমূল নেতা তথা আরামবাগের পুর-প্রশাসক স্বপন নন্দীর ‘অনুগামী’ তৃণমূল নেতারা। আরামবাগ পুর-এলাকার ১৯টি ওয়ার্ড ধরে এই শিবির চলবে বলে জানিয়েছেন স্বপনবাবু। এরই মাঝে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির উদ্যোগে ৬ জুন রবীন্দ্রভবনে, ২১ জুন পুরশুড়া এবং ২৩ জুন গোঘাটে শিবির করে গড়ে ১০০ -১৫০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করা হয়।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে কোথাও যাতে রক্তের অভাব না হয়, তার জন্য দলের পক্ষে সমস্ত ব্লক এবং শাখা সংগঠনগুলিকে রক্তদান শিবির করার নির্দেশ দিয়েছি। তা ধারাবাহিক ভাবে চলবে।” গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, “কোনও সংযমী দ্বন্দ্বে সমাজ বা মানুষের উপকার হলে তা ভাল!’’ অন্য দিকে অপরূপা বলেন, “করোনা-আবহে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ক্লাবগুলি রক্তদান শিবির বাতিল করছে। এই অবস্থায় রক্তের সরবরাহ ঠিক রাখতে আমরা বেশি করে শিবির করছি।’’ তিনি অবশ্য মানছেন, ‘‘আরামবাগে অনেক আগে থেকেই দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে। রাজ্য নেতৃত্ব তা নজরে রেখেছেন।”

রক্তসঙ্কট কমেছে বলে মেনে নিয়েছেন মহকুমা হাসপাতাল সুপার সত্যজিৎ সরকার। তাঁর কথায়, “গত দেড় মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলি রক্তদান শিবির করায় ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্তের জোগান থাকছে। এখন প্রায় দুশোর বেশি ইউনিট রক্ত মজুত থাকছে।’’ তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীকোন্দল’ এমন ‘স্বাস্থ্যকর’ চেহারা দেখে খুশি মানুষও। দুই গোষ্ঠীর কর্মসূচিতে যোগদানকারী আরামবাগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিমলকান্তি সরকার বলেন, “এ রকম দ্বন্দ্ব থাকলে থাকুক। সাধারণ মানুষই এতে লাভবান হচ্ছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Blood donation camp Blood Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy